দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ ম্যাচটায় জুভেন্টাসই হেসেখেলে জিতেছিল। আর সেটা হয়েছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নামের একজনের কল্যাণে। রোনালদোর হ্যাটট্রিকে সেবার কালিয়ারিকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল জুভেন্টাস। কিন্তু একই দলের বিপক্ষে জুভেন্টাসের আজকের জয়টা অত সহজে আসেনি। প্রথমে পিছিয়ে পড়েও পরে ম্যাটাইস ডি লিখট ও দুসান ভ্লাহোভিচের গোলে আজ সিরি আ এর ম্যাচে কালিয়ারিকে ২-১ গোলে হারিয়েছে জুভেন্টাস।
অথচ সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনা করলেও এই ম্যাচে জুভেন্টাসের হেসেখেলে জেতার কথা। আগের চার ম্যাচেই হেরেছে কালিয়ারি, হজম করেছে মোট ১১ গোল। শেষ ম্যাচে উদিনেসের বিপক্ষে হেরেছে ৫-১ গোলে। নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে জুভেন্টাসও হেরেছে, তাই বলে পয়েন্ট তালিকার ১৭ নম্বর স্থানে থাকা কালিয়ারির মতো বাজে দশা নিশ্চয়ই ছিল না তাদের!
বিজ্ঞাপন
কিন্তু ম্যাচের শুরুতে দুই দলের খেলা দেখে তেমনটা মনে হয়নি। দশ মিনিটেই এগিয়ে গিয়েছিল কালিয়ারি। পাওলো দিবালার পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে দুর্দান্ত এক প্রতি আক্রমণে রোমানিয়ান মিডফিল্ডার রাজভান মারিন বল বাড়ান ইতালি জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড জোয়াও পেদ্রোর দিকে। পেদ্রোর গোল করতে সমস্যা হয়নি। এ নিয়ে জুভেন্টাসের বিপক্ষে কালিয়ারির হয়ে ম্যাচের প্রথম দশ মিনিটের মধ্যে গোল করা খেলোয়াড়দের ছোট্ট তালিকায় ঢুকে গেলেন ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই ফরোয়ার্ড। তাঁর আগে এই কৃতিত্ব ছিল রিকিওতি গ্রেত্তি (১৯৭১), লুইস অলিভিয়েরা (১৯৯৫), লুকা গালিয়ানোর (২০২০)। এর মধ্যে অলিভিয়েরার সঙ্গে নিজের মিল আরেকটু বেশিই খুঁজে পাবেন পেদ্রো। তাঁর মতো অলিভিয়েরাও যে ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন! পেদ্রো ইতালির হয়ে খেললেও অলিভিয়েরা পরে খেলেছিলেন বেলজিয়ামের হয়ে।
২৩ মিনিটেই সমতায় ফেরার সুযোগ পায় জুভরা। কিন্তু লুকা পেল্লেগ্রিনির সে গোলটা হয়নি ফরাসি মিডফিল্ডার আদ্রিয়াঁ রাবিওর কারণে। রাবিওর হাতে বল লেগেছিল, ফলাফল, গোল বাতিল।
এত কিছুর পরেও ম্যাচে এগিয়ে থাকার স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যেতে পারেনি কালিয়ারি। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে জুভেন্টাসকে সমতায় ফেরান ডাচ ডিফেন্ডার ম্যাটাইস ডি লিখট। ৪৫ মিনিটে ছোট্ট কর্নারের মাধ্যমে কিছুক্ষণ মাঠের বাঁ প্রান্তে লেফটব্যাক লুকা পেল্লেগ্রিনির সঙ্গে বল আনা-নেওয়া করেন কলম্বিয়ান উইঙ্গার হুয়ান কুয়াদ্রাদো। বল পেয়েই চকিতে কালিয়ারির একজন ডিফেন্ডারকে ছিটকে বিপজ্জনকভাবে বক্সে ঢুকে যান, ক্রস বাড়ান মাঝখানে। সেখান থাকা ডি লিখটের মাথা ছুঁইয়ে গোল করতে সমস্যা হয়নি মোটেও।
কালিয়ারির গোলে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত দিবালা করেছেন শেষ দিকে এসে, সার্বিয়ান স্ট্রাইকার দুসান ভ্লাহোভিচকে দিয়ে গোল করিয়ে। ৭৫ মিনিটে ভ্লাহোভিচের গোলে এগিয়ে যায় জুভেন্টাস। এরপর আর অঘটন ঘটেনি কোনো, ২-১ স্কোরলাইন নিয়েই ম্যাচ শেষ করে দুই দল।
এই জয়ের মাধ্যমে ৩২ ম্যাচে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স্থানে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করল জুভেন্টাস। এক ম্যাচ কম খেলে শীর্ষে থাকা এসি মিলানের পয়েন্ট ৬৭।