ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের কারাগারে যাওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, দেশের এগিয়ে যাওয়ার স্বার্থে একজন শিক্ষককে হয়রানির মধ্যে পড়া উচিত নয়।
আজ শনিবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে স্কাউটস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে আমাদের আশপাশের অনেক দেশে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বাংলাদেশ শান্তিতে আছে, এই শান্তিটা কারো কারো হয়তো পছন্দ হচ্ছে না।
তাই একটু বোধ হয় ধৈর্য ধরার প্রয়োজন রয়েছে। যেকোনো সময় যেকোনো ছুতায় আমাদের শান্তি-শৃঙ্খলা, আমাদের সম্প্রীতি নষ্ট করা এবং সেগুলো উসকে দেওয়া কোনোভাবেই উচিত নয়। ‘
দিপু মনি বলেন, ‘আমাদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য ধর্মীয় সম্প্রীতি ধরে রাখা দরকার। একই সঙ্গে আমাদের শিক্ষকদের নিরাপত্তা দরকার। আমাদের বিজ্ঞান প্রযুক্তি নিয়েও এগিয়ে যেতে হবে। সেখানে শিক্ষকের মর্যাদার ও নিরাপত্তার দিকও আমার দেখতে হবে। শিক্ষায় এগিয়ে যেতে হলে শিক্ষকের সামাজিক এবং আর্থিক নিরাপত্তাও দিতে হবে। ‘
একজন শিক্ষকের সঙ্গে কেন এমন ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধর্ম যার যার ব্যক্তিগত বিশ্বাস। আর বিজ্ঞান শিক্ষাকে বাদ দিয়ে দেশ এগিয়ে যেতে পারে না।
বিষয়টি আইনগতভাবে দেখা হচ্ছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘আমি মনে করি, পুরো বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বিজ্ঞানের একজন শিক্ষক বিজ্ঞান পড়াবেন। আমরা তো বিজ্ঞানবিবর্জিত হতে পারি না। ‘
তিনি বলেন, ‘সবার জীবনে ধর্ম একটি বড় ভূমিকা পালন করে। ধর্ম যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। ধর্মশিক্ষার যদি ক্লাস হয় সেখানে শিক্ষক ধর্ম শেখাবেন। বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের সংঘর্ষের জায়গা নেই। কোথাও যদি সংঘর্ষ হয় সেটা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা ভাববেন। আসলে আমি সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ নই। তাই আমি সেটি নিয়ে মন্তব্য করতে পারি না। ‘
বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের মুক্তির বিষয়ে দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে যা করণীয়, আমরা সেই চেষ্টাটি করব। সবাইকে বলব, আমাদের বোধ হয় ধৈর্য ধরার প্রয়োজন রয়েছে।
‘যেকোনো ছুতোয় আমাদের শান্তি-শৃঙ্খলা, সম্প্রীতির মতো বিষয়গুলো নষ্ট হওয়ার মতো কোনো কিছু করা বা উসকে দেওয়া একেবারেই ঠিক নয়’ বলে জানান তিনি।