এখন থেকে প্রতি বছর ২০ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। বর্তমানে দেশটি প্রতি বছর ১৩ হাজার ৭৫০ জন শরণার্থীকে নিজেদের ভূখণ্ডে আশ্রয় দিয়ে থাকে।
শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার পরিমান এক ধাক্কায় ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি বিগত ৩০ বছরেরর মধ্যে সর্বোচ্চ বলে মন্তব্য করেছেন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড।
সাগরপথে আসা শরণার্থীদের অবৈধভাবে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ রোধ করার জন্য সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে নতুন একটি শরণার্থী আইন অনুমোদিত হয়। এ আইনের ফলে এখন থেকে অবৈধভাবে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের চেষ্টাকারীদের অস্ট্রেলীয় মূল ভূখ-ের বাইরে প্রতিবেশী নাউরু এবং পাপুয়া নিউি গনিতে নির্মিত আশ্রয় কেন্দ্রে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাখা হবে।
ঝুকিপূর্ন সাগরপথে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ নিরুৎসাহিত করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষের পক্ষে জানানো হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার বর্তমান নীতি পর্যালোচনার জন্য গঠিত একটি স্বাধীন কমিশনের সুপারিশ করা ২২ দফা প্রস্তাবের আলোকে এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয় অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে।
তিন সদস্য বিশিস্ট শক্তিশালী ওই কমিশনের নেতৃত্ব দেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা প্রধান অ্যানগাস হাউসটন। কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন তাদের প্রস্তাবগুলো আশ্রয়প্রার্থীদের অবৈধ পথে অস্ট্রেলিয়া প্রবেশ নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি বৈধ প্রক্রিয়া আবেদন করা আশ্রয়প্রার্থীদের উৎসাহিত করবে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড বলেন শরণার্থী সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বৈধ আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য অস্ট্রেলীয় সরকারের পক্ষ থেকে একটি ইতিবাচক সংকেত।
তিনি বলেন, “এখানে দু’টি বার্তা আছে, প্রথমত আপনি যদি নৌকায় করে অস্ট্রেলিয়া প্রবেশের চেষ্টা করেন তবে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে নাউরু বা পাপুয়া নিউগিনির আশ্রয় শিবির। দ্বিতীয়ত আপনি যদি বৈধ প্রক্রিয়ায় আশ্রয় প্রার্থনা করেন তবে অস্ট্রেলিয়ায় আপনার পুনর্বাসনের জন্য অনেক জায়গা খালি আছে।”
সাগরপথে অবৈধ পথে অস্ট্রেলিয়ায় ঢোকার চেষ্টাকারীরা মূলত ক্রিসমাস দ্বীপ প্রান্ত দিয়ে মূল ভূখ-ে প্রবেশের চেষ্টা করে। সাধারণত ঝুকিপূর্ন এ সমুদ্র যাত্রায় তাদের বহনকারী নৌকাগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয় ত্রুটিপূর্ন ও অতিরিক্ত যাত্রীঝোঝাই।
গত জুন মাসেও ২শ’ শরণার্থীবাহী একটি নৌকা অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের নিকটে ডুবে যায়। ১৭টি মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া গেলেও ধারণা করা হচ্ছে কমপক্ষে ৭০ জন আশ্রয়প্রার্থী পানিতে ডুবে মারা যায়।
এরপরই মূলত অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে সাগরপথে আশ্রয়প্রার্থীদের অবৈধভাবে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ রোধ করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়।