তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রির জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টিসিবি’র মাধ্যমে এককোটি ফ্যামিলি কার্ড দিয়েছেন। এককোটি ফ্যামিলি কার্ড মানে পাঁচ কোটি মানুষ। বাজারে দ্রব্যমূল্যও কমে গেছে। দ্রব্যমূল্য কমায় জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। জনগণের মধ্যে যখন স্বস্তি ফিরে এসেছে তখন বিএনপির অস্বস্তি বেড়ে গেছে। তারা সেজন্য বাম-ভাইদেরকে দিয়ে হরতাল ডাকালেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য সারাদেশে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বেড়িয়ে আসছে, এতে আগামী নির্বাচনে আমরা আবারও ২০০৮ এর মতো ধস নামানো বিজয় নিশ্চিত করবো।
আজ মঙ্গলবার (২৯মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, আবুল কাশেম চিশতি, উত্তরজেলা আ.লীগ নেতা পৌর মেয়র শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, ইদ্রিছ আজগর, পৌরসভা আ.লীগের সভাপতি মাষ্টার আসলাম খাঁন প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পর কিছু কিছু পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়, তখন বিএনপি সারাদেশে নানা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে তারা দ্বীচারিতা নীতি অবলম্বন করেছে। একদিকে মজুদদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দিয়েছে পণ্য মজুদ করার জন্য এবং পণ্যের মূল্য বাড়ানোর জন্য, অন্যদিকে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য কর্মসূচী দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে বিএনপি সারাদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। বিএনপির কাজটাই হচ্ছে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো। আপনারা দেখেছেন যখন পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয় তখন বিএনপি বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। ছেলেধরা গুজব ছড়িয়েছিল। এই পদ্মাসেতু করতে পারবেনা বলে তারা নানা ধরণের বিভ্রান্ত ছড়িয়েছিল। আজকে পদ্মাসেতু হয়ে গেছে, উদ্বোধনের অপেক্ষায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে এপার থেকে ওপারে গেছেন।
তিনি বলেন, পৃথিবীর ১৩০টি দেশ যখন করোনার টিকা দেয়া শুরু করতে পারেনি, তখন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা টিকা দেয়া শুরু করলো। করোনার প্রথম, ২য় এবং ৩য় ঢেউ তিনি যেভাবে মোকাবেলা করেছেন এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রশংসা করেছেন। জাতিসংঘ প্রশংসা করেছেন, পৃথিবীর নেতৃবৃন্দ প্রশংসা করছেন। কিন্তু বিএনপি প্রশংসা না করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। তারা এই টিকা না নেওয়ার জন্য মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পরে নিজেরাই গোপনে টিকা নিয়েছে। লজ্জা শরম ভেঙে কেউ কেউ জনসম্মুখেও টিকা নিয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে প্রকৃতপক্ষে বিএনপিকে খুজে পাওয়া যায়না। বিএনপি আছে শুধু টেলিভিশনের পর্দায়।
টেলিভিশনের সাংবাদিকরাই মূলত বিএনপিকে বাচিঁয়ে রেখেছে। বিএনপিকে টেলিভিশন ছাড়া কোথাও খুজে পাওয়া যায় না। মাঝেমধ্যে দুয়েকটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশে আবার নিজেরা নিজেরা মারামারি করে।
তিনি বলেন, তারা বাম-ভাইদের দিয়ে হরতাল ডাকালো। হরতাল ডেকে জাফর উল্লাহ সাহেব নিজে স্বপরিবারে লন্ডন চলে গেলেন। আর বাম ভাইদের হরতালের সময় গতকাল ঢাকা শহরে প্রচন্ড ট্রাফিক জ্যাম ছিল। বাম ভাইদের আমি সম্মান করি, কারণ তারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। কিন্তু তারা কেনো হরতাল করে জনগণের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি করলেন সেটিই আমার প্রশ্ন।
রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামীলীগ শক্ত ভীতের উপর দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, জনগণকে মনে করিয়ে দিতে হবে ১৩ বছর আগে দেশের কি পরিস্থিতি ছিল। এতো যে ভাতা এবং যে উপকারভোগী, প্রতিটি ইউনিয়নে দেড় দুই হাজার মানুষ ভাতা পাচ্ছে। এরবাইরেও রাস্তাঘাট তো হয়েছে।
তিনি বলেন, কারো মেয়ে স্কুলে গেলে এখন তার কাছে মোবাইল ফোনে টাকা চলে আসে, এসব আগে ছিল না। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার যাদুকরী নেতৃত্বে এভাবে দেশ এগিয়ে গেছে। এই কথাগুলো জনগণের মাঝে আমাদের নেতাকর্মীদের মনে করিয়ে দিতে হবে, প্রচার করতে হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এখনও শক্ত ভীতের উপর দাঁড়িয়ে। আগামী নির্বাচনেও ইনশাআল্লাহ সারাদেশে আমাদের ধস নামানো বিজয় নিশ্চিত হবে।