ঈদে নতুন জামা চাওয়ায় দুই সন্তানকে হত্যা!

ঈদে নতুন জামা চাওয়ায় দুই সন্তানকে হত্যা!

ঈদের জন্য ছেলে-মেয়েকে নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতে পারেননি আব্দুল মালেক। যেকারণে দুই সন্তানকে কুষ্টিয়ার লালনশাহ্ সেতুর ওপর থেকে পদ্মা নদীতে নিক্ষেপ করে নিজে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি।

পরে এলাকাবাসী নদী থেকে বাবা আব্দুল মালেককে জীবিত উদ্ধার করলেও তার হতভাগ্য শিশু সন্তান মুন্নি ও মানছুরের কোনো সন্ধান পাননি।

আব্দুল মালেক কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২দাগ গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার সকাল ৯টায় এই হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটলেও শনিবার বিষয়টি জানাজানি হয়।

জানা যায়, উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২দাগ গ্রামের দিনমজুর আব্দুল মালেকের কাছে তার দুই ছেলেমেয়ে ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাক কিনে দেওয়ার বায়না ধরে। কিন্তু অভাবের কারণে তা কিনে দিতে পারেননি ওইদিন মজুর। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি শুরু হয়।

এর এক পর্যায়ে শুক্রবার সকাল ১০টায় স্ত্রী মমতাজ বেগমের কাছ থেকে দুই সন্তানকে চুল কাটানোর নাম করে নিয়ে যায় আবদুল মালেক। পরে লালন শাহ সেতুর মাঝামাঝি অবস্থানে গিয়ে প্রথমে বড় মেয়ে মুন্নি পরে ৫ বছরের ছেলে মানছুরকে পদ্মা নদীতে নিক্ষেপ করেন। এরপর আব্দুল মালেক নিজেও নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

তবে এলাকাবাসী কিছুক্ষণ পর আবদুল মালেককে নদী থেকে উদ্ধার করলেও সন্ধান পাওয়া যায়নি তার দুই ছেলে মেয়ের।

নিহত দুই সন্তানের মা মমতাজ বেগম জানান, স্বামী কাজ জানলেও কাজ না করে ঘরেই বসে থাকে। তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করে, কাঁথা সেলাই করে কোনো রকম দুই সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেন। কিন্তু ঈদে ছেলেমেয়েরা নতুন জামা-কাপড়ের জন্য বায়নার ধরে, এ কথা স্বামীকে জানালে স্বামী বায়না মেটাতে না পেরে কৌশলে তার দুই সন্তানকে নদীতে ফেলে হত্যা করেছে।

শনিবার রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুই শিশুর লাশের কোনো সন্ধান মেলেনি।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, অনেক চেষ্টা করেও শিশু দুটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর ২ দিন অতিবাহিত হওয়ায় তাদের জীবিত উদ্ধারের আশা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় ঘাতক বাবা আব্দুল মালেককে আটক  করেছে পুলিশ।

এদিকে, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিক আব্দুল মালেকের পরিবারকে শনিবার বিকেলে ১০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন।

 

বাংলাদেশ