ঝালকাঠির রাজাপুরে র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমনের মায়ের দায়ের করা মামলায় র্যাবকে নির্দোষ প্রমাণ করে আদালতে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) দাখিল করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলেও লিমন বিষয়টি ঝালকাঠির আইনজীবীদের মাধ্যমে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জানতে পারেন।
এ বিষয়ে লিমন হোসেন বলেন, ‘পুলিশ গোপনে মঙ্গলবার আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। পরে আমি আইনজীবীদের মাধ্যমে বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানতে পারি।‘
লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আ. হালিম তালুকদারকে ফোন দিয়ে প্রথমে ঈদ মোবারক জানাই। তাকে আমাদের কাউখালীর বাড়িতে আসতে বলি। সে সময় তিনি আমাদের বাড়ির ঠিকানা জানতে চান। আমি তাকে আমাদের বাড়ির ঠিকানা বলি। তখন তিনি উত্তরে বলেন, ’ঠিক আছে, আসবো।‘
তিনি বলেন, ‘এসময় তাকে বলি যে, আপনি র্যাবের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েন। তখন তিনি বলেন, ’যাই-ই করি না কেন, আপনাদের জানিয়েই করবো।‘
এর পর লিমনের মা কাছে প্রশ্ন করে জানতে চান, ‘হালিম সাহেব আমাদের জানালেন না কেন? মামলায় পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দিলেও আমাদের জানাতে পারতো। কিন্তু তিনি আমাদের কিছুই জানাননি।‘
তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার উকিলের কাছ থেকে জানার পর তদন্ত কর্মকর্তা আ. হালিম তালুকদারকে বার বার ফোন দিলেও তার ফোনটি বন্ধ পাচ্ছি। তা হলে বলেন, আমরা কী করবো?’
এ ব্যাপারে লিমনের আইনজীবী আক্কাস সিকদার বলেন, ‘ছেলেকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম গত বছরের ১০ এপ্রিল রাজাপুর থানায় র্যাব-৮-এর উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) লুৎফর রহমানসহ ৬ র্যাব সদস্যের নামে মামলা করেন।
এ মামলায় র্যাব নির্দোষ বলে পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে।‘
এদিকে, তদন্ত কর্মকর্তা আ. হালিম তালুকদারের সেলফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বিকেলে বাড়ির কাছে মাঠে গরু আনতে গিয়ে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের দিনমজুর তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে কলেজছাত্র লিমনকে র্যাব-৮-এর সদস্যরা পায়ে গুলি করে।
পরে হাসপাতালের চিকিৎসকরা লিমনের বাম পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন।