ইফতার নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করার আহবান জানিয়েছেন যোগাযোগ ও রেলমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, “ইফতার নিয়ে এক ধরনের রাজনীতি শুরু হয়েছে। নেতাদের ইফতারের দাওয়াত দিয়ে বক্তব্য দেওয়ানো এক ধরনের কালচার হয়ে গেছে। এখানে থেকে বের হয়ে আসুন।”
সোমবার বিকেলে শাহজাহানপুরের মাহবুব আলী মিলনায়তনে বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক লীগ আয়োজিত ১৫ আগস্ট শোক দিবসের আলোচনা সভায় দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “ইফতার হলো ধর্মীয় একটি বিষয়। এখানে রাজনীতি আসবে কেন তা আমার বুঝে আসে না।”
তিনি বলেন, “আগে ইফতারে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া হতো না। এখন ইফতারে এসে নেতারা রাজনৈতিক বক্তব্য দেন। কিন্তু ইফতার আর ভাষণের মধ্যে পার্থক্য আছে।”
কাদের বলেন, “আমি কোনো ইফতারের প্রোগ্রাম রাখলে শুধু ইফতার করার জন্য আসি, বক্তব্য দেওয়ার জন্য নয়।”
জাতীয় শোক দিবসের এ আলাচনা সভা বিকাল চারটা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয় সাড়ে পাচঁটায়। মঞ্চে নেতারদের সবার বক্তব্য দেওয়া শেষ হয়ে গেলেও যোগাযোগ মন্ত্রী না আসায় আয়োজকরা পড়েন বিব্রতকর অপেক্ষায়। শেষে প্রায় আধা ঘণ্টা অনুষ্ঠান স্থগিত রাখতে বাধ্য হয় তারা।
আজানের মাত্র পাঁচ মিনিট আগে মন্ত্রী অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু তিনি কোনো বক্তব্য দেবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন।
তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী ইফতারের কোনো অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন না।”
এরপর তিনি শ্রমিক নেতাদের তুলাধুনা করতে শুরু করেন।
তিনি বলেন, “আপনারা আমাকে আর দাওয়াত দেবেন না।”
পরে অনুষ্ঠানে আসা লোকজন মন্ত্রীকে কিছু বলার জন্য অনুরোধ করলে তিনি বক্তব্য দেন।
এ সময় তিনি বলেন, “রেলে যে অবৈধ জমি বেদখল আছে তা উদ্ধার করতে পারলে এবং ১২ হাজার জনবল নিয়োগ দিতে পারলে রেলকেও বিআরটিসি’র মতো লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছর যদি নতুন ইঞ্জিন ও নতুন কোচ আনা হয় এবং লাইনগুলোকে ডাবল লাইনে উন্নীত করতে পারি তাহলেও রেলের উন্নয়নে অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে।”
রেলের কর্মকর্তা ও কর্মচারী সবার সহযোগিতা কামনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সবার সহযোগিতা করলে এবং টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করলে রেলকে আর লোকসানের মুখ দেখতে হবে না।”
প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সমালোচনা করে রাশেদ খান মেনন বলেন, “আগামী নির্বাচনের প্রশ্ন তুলে বিএনপি দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে ষড়যন্ত্র করছে।”
তিনি বলেন, “সব রাজনৈতিক দলকে সুস্পষ্ট প্রস্তাব দিতে হবে আগামী নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে।”
বিএনপির সমালোচনা করে রাশেদ খান মেনন বলেন, “বিএনপি বলছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “এখন তাদের কাছে প্রশ্ন তারা কি আসলে নির্বাচন চান? তারা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চান কি না?”
বিএনপি-জামায়াত ও দেশের একটি দল বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চক্রান্ত করে দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ ও রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান আকন্দ, কৃষক লীগের সহ-সভাপতি এম এ করিম প্রমুখ।