দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে ‘দ্যা ইকোনমিস্ট পত্রিকা’ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে প্রকৃত খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি ফুটে ওঠেনি। পুরাতন তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘ন্যাশনাল ফুড পলিসি প্ল্যান অব অ্যাকশন’ এবং ‘কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্লান’র মনিটরিং প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, “খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বর্তমানে সঠিক পথেই রয়েছে। সম্প্রতি ইকোনমিস্ট পত্রিকার বরাত দিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।”
প্রকৃতপক্ষে খাদ্য নিরাপত্তার দিক থেকে বর্তমানে বাংলাদেশ ভাল অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “২০০৭ ও ২০০৮ সালের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ইকোনমিস্ট পত্রিকা এ প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে।”
মন্ত্রী জানান, এ বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সরকার জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “প্রতিবেদন থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০০৭-২০০৮ সালে কম ওজনের শিশুর হার ছিল শতকরা ৪১ শতাংশ। বর্তমানে তা কমে দঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশে। অপর দিকে বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হওয়া শিশুর হার ছিল ৪৩ শতাংশ যা বর্তমানে ৪১ শতাংশ। অপরদিকে ২০০৭-২০০৮ সালে কৃষি প্রবৃদ্ধির হার ছিল শতকরা তিন ভাগ যা বর্তমানে বেড়ে হয়েছে পাঁচ দশমিক ২৪ শতাংশ। বর্তমান তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে সঠিক তথ্য ফুটে উঠতো।”
তবে এ প্রতিবেদনটি আগামীতে সঠিকভাবে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে খাদ্যমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশে খাদ্য সরবরাহ ও মজুদ নিশ্চিত হয়েছে। তবে পুষ্টিমান একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পুষ্টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। বর্তমানে খাদ্যশস্যের মূল্যও কম এবং জনগণ সহজেই খাদ্য কিনতে পারছে। তবে আয় কমের কারণে অনেকেই কিনতে পারছে না। এ কারণে শাক-শবজি ও ফল-মূল উৎপাদনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পুষ্টিমান নিশ্চিত করতে মৎস্য উন্নয়ন ও পোল্ট্রির দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী ‘জাতীয় খাদ্যনীতি মহাপরিকল্পনা’ এবং ‘কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্লানে’র মনিটরিং প্রতিবেদনের মোড়ক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে খাদ্য বিভাগের সচিব মুশফেকা ইকফাৎ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. এম এ সাত্তার মন্ডল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম, জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি দমিনিক বার্গন (Mr. Dominique Burgeon), ইউএসএআইডি’র মিশন ডাইরেক্টর রিচার্ড গ্রিন (Mr. Richard Greene), ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের শার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স এনড্রু বারনার্ড (Mr. Andrew Bernard), খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের মহাপরিচালক নাসের ফরিদ প্রমুখ।