মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইরানের সঙ্গে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের দায়ে বিতর্কিত স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছে। ইরান কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকটির কার্যক্রম বর্তমানে হুমকির সম্মুখীন।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিরোধ মিটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের লাভজনক ব্যবসা অব্যাহত রাখার জন্য যে কোনো উপায়ে আপোষের চেষ্টা করা হচ্ছে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে।
এছাড়া সঙ্কট উত্তরণে ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পক্ষে নিউইয়র্কের আর্থিক খাতের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য কেন্দ্রীয় আর্থিক নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আলোচনা সপ্তাহ ধরে চলতে পারে বলে জানা গেছে। তবে পরবর্তী সপ্তাহের মধ্যেই এ ব্যাপারে একটি সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের কর্মকর্তারা।
তবে এক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, উভয়পক্ষের আলোচনা এখনও প্রাথমিক অবস্থায় আছে এবং আলোচনা কোনো গ্রহণযোগ্য সমাধান ছাড়াও শেষ হতে পারে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বিচার বিভাগ, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক এবং ম্যানহাটনের জেলা অ্যাটর্নী অফিসও এ আলোচনায় অন্তর্ভূক্ত থাকবে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যের আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিউইয়র্ক ডিপার্টমেন্ট অব ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের সুপারিন্টেন্ডেন্ট বেনজামিন লাসকি এক বিবৃতিতে দাবি করেন, ব্যাংকের যুক্তরাষ্ট্র শাখা ইরানের সঙ্গে হাজার হাজার অনুমোদনহীন লেনদেনে জড়িত। এমনকি পরবর্তীতে এ ব্যাপারগুলো ধামাচাপা দিতে মিথ্যা এবং অসম্পূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করে ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ব্যাংকটি।
একই সঙ্গে লাস্কি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের তার দপ্তরে এসে এ ব্যাপারে জবাবদিহি করতেও তলব করেন। পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় কেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড নিউইয়র্কে কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সুযোগ পাবে সে ব্যাপারেও ব্যাখ্যা তলব করেন তিনি।
নিউইয়র্ক ডিপার্টমেন্ট অব ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের এ নির্দেশে বিস্মিত হওয়ার পাশাপাশি বড় ধরণের ধাক্কা খায় ব্যাংকটি।
সংস্থার নির্দেশনা জারির পরপরই দেওয়া এক ব্যাখ্যায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা এ বিষয়ে চলমান তদন্তে প্রথম থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এবং স্থানীয় আইনী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করে আসছেন। পাশাপাশি ব্যাংকের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে ব্যাপক ও বিস্তৃত তদন্ত চালিয়ে এর ফলাফল সময় মতো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও দাবি করে তারা।