মিরপুরের খেলার মাঠে আসলে কি হয়েছিল? মঙ্গলবার প্রিমিয়ার লিগের ফলাফলের চেয়ে আশরাফুল-তামিমের ঘটনার দিকেই বেশি নজর পড়েছে দেশের ক্রিকেট ভক্তদের। মিডিয়া কর্মীরাও বিষয়টা ভালোভাবে কাভার করেছে। ওল্ড ডিওএইচইএস-ভিক্টোরিয়ার ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে আশরাফুলের দল ব্যাট করার মাঝামাঝি সময় এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। যা এদেশের কোনো ক্রিকেটপ্রেমী প্রত্যাশা করেনি। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সম্মান ক্ষুণ্ন করেছে ।
আশরাফুল মিডিয়াকে বলেছে ‘তামিম সরি বলেছে। কী করব বলেন, আমার কী করার ছিল! আমি আম্পায়ারকে বলেছি ‘ডিকেন্স আউট হবার পর বাদল ভাই বাজে মন্তব্য করছিলেন ড্রেসিং রুম থেকে। যা কি না বৈধ নয়। আমি আম্পায়ারকে সেটাই বলেছি, তিনি যদি কিছু বলেন সেটা গ্যালারিতে গিয়ে বলতে পারেন। দলের ড্রেসিং রুমে নয়। তখনই তামিম আমার ওপর ক্ষেপে ওঠে। আমাকে বলে আমি যেন কোনো কথা না বলি। আমি তো দলের অধিনায়ক। আমি কথা বলব না কে বলবে?’
আশরাফুল বলেন, ‘ঘটনার পরপরই সাকিব আমার কাছে এসেছে। আমার সবচেয়ে খারাপ লেগেছে সাকিব আমার কাছে যখন ‘সরি’ বলতে এসেছে, তখন তামিম সাকিবকে বলছে ‘সাকিব সরি বলবি না’। আমি তো ওদের বয়সে বড়। অথচ তামিম এমন আচরণ করলো কী করে?’
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একটাই কথা এসেছে, ‘তামিম এরকমই’। এর আগেও এমন অপরাধে শাস্তি পেয়েছে সে। জাতীয় দলের ভড়াডুবি কী তবে এই কারণে? তামিম হয়তো ভুলে গেছে এই আশরাফুল একসময় দেশের কোটি তরুণ-তরুণীর স্বপ্নের নায়ক ছিলো। মাঠে ‘আশরাফুল আশরাফুল’ ধ্বনি তোলেনি এমন দর্শক খুজে পাওয়া যাবে না। আশরাফুলের কৃতিত্বের কাছে তামিম এখনও অনেক পেছনে। টাইগারদের বড় বড় বেশির ভাগ সাফল্যের নায়ক এই সাবেক অধিনায়ক। শুধু আশরাফুল নয়, তামিম শেষ কোনো ম্যাচে ভালো রান পেয়েছে অনেক দর্শকই ভুলে গেছে। একজন সাবেক অধিনায়ক ও সিনিয়র খেলোয়াড়ের সাথে এমন আচরণ অনেকেই দেখছে ভিন্ন চোখে। অনেকে ভাবছে, তামিমের বাহুতে এই শক্তি কার? মাঠে আম্পায়াররা বাধা না দিলে এর চেয়ে বেশি কিছু যে হতো তা অনুমেয়। এক ক্রীড়া রিপোর্টার বললো মামা-কাকার সহযোগিতা না থাকলে হয়তো তামিমের জায়গা এতো মসৃণ থাকতো না। লম্বা সময় বাজে পারফরম্যান্স করে এখন অনেক ভক্তের কাছে বিরক্তির কারণ তামিম ইকবাল। তারপরও দলে ভালো অবস্থানে আছে সে। বাজে খেলার জন্য সবাই দল থেকে বাদ পড়লেও কোন শক্তির বলে তামিম ঠিকই দলে স্থান পায় অনেকেই সেটা জানে। বাংলাদেশে ক্রিকেট দল মাঝে কিছু ভালো সময় পার করলেও এখন এই দূরাবস্থার জন্য কারা দায়ী তা ভাববার সময় এসছে। সব কিছুতেই আত্মীয়করণ আমাদের কোথায় দাঁড় করাবে?
একজন সিনিয়র সহকর্মীর সাথে আচরণ কেমন হবে তা না জেনে জাতীয় দলে স্থান পাওয়া তামিম তাকে নিয়ে যাই ভাবুক ডিসিপ্লিন কমিটি কী ভাবছে সেটাই আমাদের জানতে চাওয়া। শুধু তামিম নয়, ভাবষ্যতে এমন ঘটনা আর কেউ ঘটালে শাস্তি কি হতে পারে দল ও দেশের স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত আশা করছে পুরো দেশবাসী। আজ আশরাফুল দলে আছে, কাল নেই এই দুর্বলতায় কেউ তাকে খাটো করলে তাকেও মনে রাখতে হবে এমন নির্মম দিন অনেকেরই আসবে। অনেকেরই আসছে।