হাঙ্গার সম্মেলনে যোগ দিতে আবারও লন্ডন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

হাঙ্গার সম্মেলনে যোগ দিতে আবারও লন্ডন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

আবারও লন্ডনে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১২ আগস্ট লন্ডনে অনুষ্ঠেয় ক্ষুধা ও অপুষ্টি বিষয়ক ‘হাঙ্গার সম্মেলনে’ যোগ দিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের আমন্ত্রণে তিনি লন্ডন আসছেন।

শনিবার (১১ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টায় (লন্ডন সময়) বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছবেন। এর আগে গত ২৫-২৯ জুলাই লন্ডন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. সাইদুর রহমান খান ও ব্রিটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।

তিন দিনের সফরে শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় লন্ডনের সেন্ট প্যাংক্রাস রেনেসাঁ হোটেলে অবস্থান করবেন। ১২ আগস্ট বিকেলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর অফিস ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে আরও কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে ‘হাঙ্গার সামিটে’অংশ নেবেন।

সম্মেলনে বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও বেসরকারি খাতের নেতারাও উপস্থিত থাকবেন।

অলিম্পিকের সমাপনি অনুষ্ঠানেও যোগদান করতে পারেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সেদিনই রাত ৮টায় প্রধানমন্ত্রীর হোটেল স্যুটে ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী অ্যান্ড্রু মিশেল সাক্ষাৎ করবেন তার সঙ্গে। ১৩ আগস্ট বেলা ২টায় আমিরাত এয়ারলাইন্সে দেশের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

কয়েকদিন আগে অলিম্পিকের সমাপনী দিনে লন্ডনে ক্ষুধা ও দারিদ্র বিষয়ক সম্মেলন ‘হাঙ্গার সামিট’ অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর অফিস।

ঘোষণায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, “অলিম্পিকের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন উপলক্ষে সারা বিশ্বের চোখ যখন লন্ডনের দিকে, ঠিক তখনই আমরা স্মরণ করতে চাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের অপুষ্টির শিকার মানুষকে। তারা দূরে থেকেও অলিম্পিক জ্বরে আক্রান্ত, অথচ পরের বেলায় পর্যাপ্ত খাবার পাবেন কি না তা নিয়েও চিন্তায় থাকতে হয়।”

তিনি বলেন, “গত বছর আফ্রিকার হর্নের দুভিক্ষ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় দারিদ্রপীড়িত জনগোষ্ঠীর মানবেতর অবস্থার কথা।”

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা অন্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ক্ষুধা ও অপুষ্টিমুক্ত বিশ্ব গড়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চাই, যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এবারের অলিম্পিক উৎসবকে কাজে লাগানো যেতে পারে।”

ক্যামেরন বলেন, “অলিম্পিকের আয়োজক দেশ হিসেবে আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্রপীড়িত মানুষের প্রতি বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করার সুযোগ গ্রহণ করতে চাই।”

এমন এক সময় লন্ডনে হাঙ্গার সামিট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যে সময় বিশ্বে ক্ষুধা ও দারিদ্রপীড়িত মানুষের সংখ্যা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী অপুষ্টির কারণে প্রতি বছর বিশ্বে ২৬ লাখ শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের মতে, গত ১০ বছরে দারিদ্র হ্রাস, শিশু মৃত্যুর হার কমানো এবং শিক্ষার উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক উন্নতি হলেও অপুষ্টি মোকাবেলায় কোনো উন্নতি নেই।

আগামী অলিম্পিকের আগে অপুষ্টিজনিত সমস্যা মোকাবেলার ক্ষেত্রে একটি লক্ষ্য পূরণের অঙ্গীকার যাতে এবারের হাঙ্গার সামিটে বিশ্ব নেতাদের কাছ থেকে আদায় করা যায়, সে বিষয়ে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে বিভিন্ন এনজিও। অবশ্য এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট ঘোষণা আসার ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।

উল্লেখ্য, অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষে গত ২৫ থেকে ২৯ জুলাই তিনি লন্ডন সফর করেন।

বাংলাদেশ