গ্রামীণব্যাংক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে: দীপু মনি

গ্রামীণব্যাংক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে: দীপু মনি

গ্রামীণব্যাংক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

তিনি বলেন, “গ্রামীণব্যাংক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি যেহেতু একান্তভাবেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ, সেহেতু জাতীয় প্রেক্ষাপট, দৃষ্টিভঙ্গি এবং আইনী কাঠামোর মধ্য থেকে সরকার এর সুরাহার চেষ্টা করছে।”

বিবিসির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এই বার্তার কারণেই প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে দেশ-বিদেশে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু গ্রামীণব্যাংক এবং ড. মু‏হাম্মদ ইউনূসের সারা বিশ্বে পরিচিতি ও সুনাম রয়েছে, হয়তো এজন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে অনেকের আগ্রহ। এ ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকেও ব্যাপক আগ্রহ দেখানো হয়েছে। তাদের কিছু পরামর্শ ছিল, কিছুটা চাওয়াও ছিল।”

এ ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে, এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দীপু মনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “সম্পর্কের অবনতি তো নয়ই, বরং অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় দেশটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অনেক বেশি ঘনিষ্ট ও জোরদার হয়েছে।”

কোনো একজন ব্যক্তিকে নিয়ে দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে তা তিনি একেবারেই বিশ্বাস করেন না বলে জানান।

গ্রামীণ ব্যাংকের অগ্রযাত্রা যেন কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, হিলারি ক্লিনটনসহ বিশ্ববাসীর যেমন চাওয়া, বাংলাদেশ সরকারও তেমনটিই চাইছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক দিন দিন ঘনিষ্ট হচ্ছে দাবি করে দীপু মনি বলেন, “গত সাড়ে তিন বছরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তিন দফা  দ্বিপক্ষীয় আনুষ্ঠানিক বৈঠক এবং বহু আন্তর্জাতিক ফোরামে দেখা হয়েছে। আমাদের দু’জনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক যেভাবে ধীরে ধীরে বন্ধুত্বের দিকে যাওয়ার কথা ঠিক সেদিকেই যাচ্ছে।”

মন্ত্রী বলেন, “বিশ্বব্যাপী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার যেসব মূল কর্মসূচি রয়েছে এর সবগুলোর সঙ্গেই বাংলাদেশ রয়েছে। এছাড়া বাণিজ্য এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক যেমন- সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার মতো কর্মসূচিতেও বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে।”

বিবিসি বাংলার সম্পাদক সাবির মুস্তাফাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তার অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক উত্থান, পড়াশুনা, বিদেশ থেকে ডিগ্রি নেওয়া, বহির্বিশ্বের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সম্পর্ক, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, গ্রামীণব্যাংক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
দীপু মনির দাবি, বাংলাদেশে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের দুই নেত্রী নারী হওয়া সত্ত্বেও এখনও দেশের রাজনীতি প্রধানত পুরুষ প্রধান। তবে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে কোনোরকম অসুবিধা হয়নি বরং একজন নারী হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর চেয়ারে বসা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।

রাজনীতির আবহে বড় হওয়া দীপু মনির ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল রাজনীতিক হওয়ার। তিনি সে কথাই জানিয়েছেন। বলেছেন, তার ডাক্তারি পড়া, জনস্বাস্থ্য নিয়ে বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা, আইন পড়া সবকিছুই ছিল রাজনীতিকে মাথায় রেখে। রাজনীতিতে তার দ্রুত উত্থানের পেছনে এসব বিষয় সহায়ক হয়েছে উল্লেখ করে দীপু মনি এ উত্থানকে তার কাজের মূল্যায়ন বলে দাবি করেন।

বাংলাদেশ