প্রয়াত ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য এবার সুইজারল্যান্ডের একটি গবেষণাগারের বিশেষজ্ঞদের পশ্চিম তীরে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। ২০০৪ সালে মারা যাওয়া ফিলিস্তিন স্বাধীনতা আন্দোলনের এ নেতার মৃত্যুর অন্তরালে বিষ প্রয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে তাদের ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
আরাফাতের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রধান তদন্তকারী তাওফিক তিরাওয়ি সুইস গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কিছু জানাননি তিনি।
তবে তার আমন্ত্রণে সাড়া দেওয়া না দেওয়ার ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত কিছু জানায়নি সুইস গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। এ ব্যাপারে গত বুধবার সুইজারল্যান্ডের ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র ডারসি ক্রিস্টেন এক বিবৃতিতে বলেন, “তাদের আমন্ত্রণের ব্যাপারে আমরা অবগত হয়েছি, এখন এ আহ্বানে সাড়া দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করছি আমরা।”
তিনি আরো বলেন, ফিলিস্তিনি কতৃপক্ষের আমন্ত্রণে সাড়া দিতে তাদের অসুবিধা নেই। তবে এর আগে স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে কারও হস্তক্ষেপ ছাড়া স্বাধীনভাবে কাজ করার নিশ্চয়তা চান তারা।
উল্লেখ্য, ইয়াসার আরাফাতের ময়নাতদন্ত করার ব্যাপারে কয়েক সপ্তাহ সিদ্ধান্তহীন ও নীরব থাকার পর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সুইস গবেষক দলকে আমন্ত্রণ জানানোর উদ্যোগ নেয়।
ফিলিস্থিনি কর্তৃপক্ষের নীরবতার সমালোচনা করে অনেকেই এ সময় বলতে শুরু করেন, এ ব্যাপারে তাদের অবস্থান এবং ময়নাতদন্ত করা না করার ব্যাপারে দ্বিধান্বিত আচরণ এ সন্দেহকেই প্রতিষ্ঠিত করে যে, আসলে সময় ক্ষেপণ করে তদন্ত প্রক্রিয়াটিকেই ধামাচাপা দিতে চাচ্ছেন তারা।
তবে শেষ পর্যন্ত তদন্তের জন্য সুইস গবেষকদের আমন্ত্রণ জানানো এ সন্দেহ থেকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে মুক্তি দেবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
গত মাসে সুইস ইন্সটিটিউট অব রেডিয়েশন ফিজিকস ঘোষণা করে, তারা প্রয়াত ফিলিস্থিনি নেতা আরাফাতের পরিধেয় পরীক্ষা করে এতে বিপজ্জনক মাত্রার পোলোনিয়াম-২১০ নামের তেজষ্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছেন। এর পর আরব দেশগুলোসহ সারা বিশ্বে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, সুকৌশলে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে আরাফাতকে।
মধ্যপ্রাচ্যের কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরার উদ্যোগে পরিচালিত আরাফাতের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে তদন্ত ও সুইস গবেষণাগারের এ সংক্রান্ত ঘোষণার পরপরই আরাফাতের বিধবা স্ত্রী সুহা আরাফাত স্বামীর দেহাবশেষ কবর থেকে তুলে পুনরায় পরীক্ষা করার আহ্বান জানান।