প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওলাঁদের প্রস্তাবিত নতুন কর নীতিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ফরাসি সমাজের ধনিক শ্রেনী। সম্প্রতি বার্ষিক সর্বনিম্ন ১০লাখ ইউরো উপার্জনকারী ব্যক্তিদের আয়ের উপর ৭৫ শতাংশ কর আরোপের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ফ্রান্সের সমাজবাদী ভাবধারার এ প্রেসিডেন্ট।
১০ লাখ ইউরোর বেশি যাদের উপার্জন তাদের আয়ের একটি অংশের ওপর এ কর প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম।
এ পরিস্থিতিতে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ফ্রান্সের ধনিক শ্রেণী। বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও সম্পদশালী ব্যক্তিদের কর সংক্রান্ত পরামর্শ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান অ্যালটেক্সিসের কর বিশেষজ্ঞ মি. গ্রান্ডিল বলেন, “সমাজের উচ্চ উপার্জন করে এমন ব্যক্তিরা ফোন করে আমাদের কাছে জানতে চাচ্ছেন এ পরিস্থিতিতে তারা দেশ ত্যাগ করবে কিনা।” তিনি আরও বলেন “এমন কি অপেক্ষাকৃত তরুণ ও সম্ভাবনাময় ব্যক্তি, যাদের আয় ২ লাখ ইউরোর বেশি নয় তারা পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছ্নে টাকা রোজগার করাকে যেদেশে ভাল চোখে দেখা হয় না সে দেশে থাকার কোন মানে হয় না ।”
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন ১৯৮০ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট মিতেরার পর ফ্রান্সের প্রথম সমাজবাদী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত মি. ওঁলাদ তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যেই এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন। “দেশকে নিজের পায়ে দাঁড় করাতে বাড়তি কর প্রদান করুন” এটিই ছিলো ওলাঁদের অন্যতম নির্বাচনী প্রচারণা।
৭৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাবটি আগামী সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সের সংসদে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।এ সিদ্ধান্ত দীর্ঘদিন ধরে জেকে বসা ইউরোপের ঋণ সংকট থেকে ফ্রান্সকে বের করে আনতে ভূমিকা রাখবে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে।
বাজেট ঘটতি মোকাবেলায় সরকার পরবর্তী অর্থ বছরে নতুন করে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ইউরো রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা করেছে।তবে নতুন এ করারোপ এ বিশাল বাজেটের খুব অল্পই যোগান দিতে পারবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সাড়ে ছয় কোটি লোকসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটিতে ১০ লাখ ইউরোর বেশি আয়কারী লোকের সংখ্যা ধারণা করা হয় ৭ থেকে ৩০ হাজারের মধ্যে।
তবে সরকারের এ পদক্ষেপের হয়তো একটি সুদূরপ্রসারি তাৎপর্য আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সমাজে প্রতিকী সাম্য প্রতিষ্ঠায় এটিকে বর্তমান সমাজবাদী সরকারের একটি প্রচেস্টা হিসেবে দেখছেন অনেকেই। কারণ ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিজেই ইতিপূ্র্বে ঘোষণা করেছিলেন, “ আমি ধনীদের পছন্দ করি না ।”