বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা চলছে: সাহারা খাতুন

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা চলছে: সাহারা খাতুন

বঙ্গবন্ধুর বিদেশে পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকরের জন্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাড. সাহারা খাতুন।

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর (উত্তর) এর আয়োজনে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুন বলেন, খালেদা জিয়া যেন জামায়াত-রাজাকারদের গাড়িতে আর কখনো লাল সবুজের পতাকা তুলে দিতে না পারেন, সে ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। ছাত্রলীগকে এ ব্যাপারে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। যখন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য চলছে, তখন মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি বিএনপি-জামায়াত দেশকে অস্থির করে তুলতে চাইছে।

মন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের বাঙালিরা আগস্ট মাসকে শোকের মাস এবং ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তানিদের বাঙালি দোসররা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে এ শোকের কলঙ্ক লেপন করে। পরে জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে এসব বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাঁচাতে চেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে ১২ নভেম্বর এ ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে এবং খুনিদের বিচার কার্য শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে পরে ১২ জন খুনির ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি ৫ জনের ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হয়। একজন বিদেশে পলাতক অবস্থায় মারা গেছেন আর এখনো ৬ জন খুনি বিদেশে পলাতক রয়েছেন। এদেরকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে বলে জানান সাহারা খাতুন।

তিনি বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধু নয়, তারা পুরো পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দিতেই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল ঘাতকরা। আর সেসব ঘাতকদের গাড়িতে লাল-সবুজের পতাকা তুলে দেন খালেদা জিয়া।

সাহারা জানান, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সিনিয়র আইনজীবী সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞের কথা বলতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে যান সাহারা খাতুন।

মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম, সাকা চৌধুরী, সাঈদীদের বিচার চলছে। ’৭১ এর এসব ঘাতকদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি-জামায়াত-শিবির চক্র। তারা জনগণের গাড়ি-বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে, সচিবালয়ের ভেতরে বোমা মারছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাড়িতে আগুন দিচ্ছে। কোনো গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে না। আর কোনো গনতান্ত্রিক দল এসব সহ্যও করতে পারে না। এসব ধ্বংসযজ্ঞ কঠোর হাতে দমন করবে এ সরকার।

খালেদা জিয়া যেন আর রাজাকারদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিতে না পারেন, জামায়াতি রাজাকার-আলবদরদের নৃশংসতা যেন আর মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, এ জন্যে ছাত্রলীগকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন তিনি।

ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ উত্তরের সভাপতি এস এম রবিউল ইসলাম সোহেলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতউল্লাহ, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম এনামুল হক শামীম, বর্তমান সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।

অন্যান্য