যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড গ্রুপ

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড গ্রুপ

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অবৈধ কার্যক্রম সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান নিউইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস`র (ডিএফএস) একটি নির্দেশনা সম্পর্কে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড পিএলসি।

ডিএফএস`র নির্দেশনায় প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে যেসব তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে, মঙ্গলবার দেওয়া এক বিবৃতিতে তা শক্তভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড কর্তৃপক্ষ।

এর আগেও গ্রুপের তরফে এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয় বিবৃতিতে। এছাড়া সন্দেহজনক সব লেনদেন পর্যালোচনা করতে প্রতিষ্ঠানের নেওয়া উদ্যোগের তথ্য সংশ্লিষ্ট সব এজেন্সিকে আগেই জানানো হয়েছিলো বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।

পর্যালোচনার সব তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এজেন্সিকে সময়মত উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। ডিএফএস ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস, দি অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল, দ্য ফেডারেল রিজার্ভ গ্রুপ অব নিউইয়র্ক এবং নিউইয়র্কের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির সঙ্গে এ ব্যাপারে তথ্য দিয়ে পুরোপুরি সহযোগিতা করা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১০ ও ২০১১ সালের পাশাপাশি সর্বশেষ ২০১২ সালে প্রকাশিত গ্রুপের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে পর্যালোচনা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়া ২০১০ এর জানুয়ারি মাসে ডিএফএসসহ সংশ্লিষ্ট সব মার্কিন এজেন্সিকে গ্রুপ স্বেচ্ছায় তথ্য উপস্থাপন করে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অবরোধের সঙ্গে জড়িত সব লেনদেনের ব্যাপারে পর্যালোচনা শুরুর ব্যাপারে গ্রুপের তরফে নেওয়া উদ্যোগ সম্পর্কেও জানানো হয় সংশ্লিষ্ট সব এজেন্সিকে।

গ্রুপের পর্যালোচনায় ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল সময়ের মধ্যে ইরান সম্পর্কিত সব লেনদেনের ব্যাপারে অনুসন্ধান করা হয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত ব্যবস্থা ‘ইউটার্ন ফ্রেম ওয়ার্ক’ সম্পর্কে পর্যালোচনায় বেশি জোর দেওয়া হয় বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, ইরানের সঙ্গে অন্যান্য দেশের বাণিজ্যে ব্যবহৃত মার্কিন ডলার বিনিময় সম্পর্কে তথ্য জানতে এ পদ্ধতি চালু করে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ।

পর্যালোচনাটি সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠানের বাইরের পরামর্শক এবং উপদেষ্টাদের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয় বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়। এছাড়া গ্রুপ নিয়মিতভাবে এ পর্যালোচনা সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য ডিএফএসের  পাশাপাশি অন্যান্য এজেন্সিকে উপস্থাপন করছে বলে জানানো হয়।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে ইতিমধ্যেই এসব তথ্য ও সাক্ষাৎকারে নোট সম্বলিত কয়েক হাজার পৃষ্ঠার তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে লেনদেন হওয়া ১৫ কোটি ডলারেরও বেশি পেমেন্ট মেসেজের ওপর একটি বিশ্লেষণও এসব তথ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করা আছে। তাই ডিএফএস উপস্থাপিত নির্দেশনায় পূর্ণাঙ্গ চিত্র উপস্থাপিত হয়নি।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়, উপস্থাপিত তথ্য এবং অন্যান্যসব দলিলের মাধ্যমে এটাই প্রমাণ হয়যে,  গ্রুপ সব সময়ই সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে সহযোগিতা করেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ এবং ইউটার্ন পেমেন্ট আইনের আওতায় পড়ে এমন লেনদেনের ব্যাপারেও গ্রুপ সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে পূর্ণ সহযোগিতা করেছে।

ইরান সংশ্লিষ্ট  ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ লেনদেন ইউটার্ন পদ্ধতির অধীনে সম্পন্ন হয়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে। তাই ইউটার্ন আইন থেকে রেহাইয়ের ব্যাপারে ডিএফএসের নির্দেশনায় যে চিত্র  উপস্থাপিত হয়েছে, তা আইনের চোখে ভুল বলে মনে করে গ্রুপ।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ইরান সম্পর্কিত লেনদেনের ব্যাপারে করা পর্যালোচনায় গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্র সরকার ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কোনো লেনদেন খুঁজে পায়নি। পাশাপাশি যে কোনো মুদ্রায় ইরানি গ্রাহকদের সঙ্গে সব নতুন ব্যবসা ৫ বছর আগেই বন্ধ করা হয়েছে।

এ ধরণের সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা সাধারণভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সব এজেন্সির সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে নেওয়া হয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই ডিএফএসের একক নির্দেশনায় বিস্মিত হয়েছে গ্রুপ। অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে।

পরিশেষে ডিএফএসের সঙ্গে এ সব বিষয়ে আরও আলোচনা করতে এবং তাদেরসহ অন্যান্য সব এজেন্সিকে প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে গ্রুপ নিজেদের অবস্থান জানাতে আগ্রহী বলেও দাবি করা হয় বিবৃতিতে।

গ্রুপ আর্থিক ব্যাপারে নিজেদের দায়িত্ব খুবই গুরুত্ব সহকারে পালন করার চেষ্টা করে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এছাড়া সব কাজই সংশ্লিষ্ট আইন ও নিয়ম-কানুনের মধ্যে থেকে করতে গ্রুপ সব সময় সচেষ্ট বলেও দাবি করা হয়।

 

অর্থ বাণিজ্য