শেয়ারবাজারের তথ্যভাণ্ডার খ্যাত সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) কারিগরি ক্রটির জন্য সফটওয়ার সহায়তা প্রদানকারী ভারতীয় সিএমসি লিমিটেডকে দায়ী করা হয়েছে।
সিডিবিএল বিপর্যয়ের কারণ নির্ণয়ে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন’র (এসইসি) চেয়ারম্যানের কাছে এ প্রতিবেদন পেশ করা হয় বলে এসইসি সূত্রে জানা গেছে।
তবে এ বিষয়ে সিডিবিএল’র কোনো গাফিলতি নেই বলেও মন্তব্য করা হয়েছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। কারণ, সফটওয়ার সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সিএমসি সিডিবিএলকে যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে, সিডিবিএল থেকে সেভাবেই কাজ করা হয়েছে। তাই এ বিপর্যয়ের পেছনে সিডিবিএল’র কোনো অসতর্কতা নেই বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
জানা গেছে, সিডিবিএল বিপর্যয়ের কারণে ৩১ জুলাই মঙ্গলবার একদিন লেনদেন বন্ধ থাকার কারণে কি কি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে এবং এর দায়ের বিষয়ে পরবর্তী সময়ে কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে সে বিষয়ে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
সিএমসি লিমিটেড বা কম্পিউটার মেইনটেনেন্স করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড হিসেবে ১৯৭৫ সালে ভারত সরকারের কাছ থেকে নিবন্ধন লাভ করে। এরপর ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়। এ প্রতিষ্ঠানটিই সিডিবিএলকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে বলে সিডিবিএল জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুলাই সোমবার সিডিবিএলে কারিগরি ক্রটি দেখা দেয়। এ কারণে ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্টরা সিডিবিএলে লগইন করতে পারেননি। ফলে ওই দিনের লেনদেন ক্লিয়ারিং করতে সক্ষম হননি ডিপিরা। এ পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বাধ্য হয়েই দুই স্টক এক্সচেঞ্জ লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এ কারিগরি ত্রুটির কারণ নির্ণয়ে ৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় চার সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে এসইসি। কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় এসইসি’র নির্বাহী পরিচালক আশরাফুল ইসলামকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, এসইসির পরিচালক রাজিব আহমেদ এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ’র (সিএসই) আইটি (তথ্যপ্রযুক্তি) বিভাগ থেকে একজন করে মোট দুইজন কর্মকর্তা। কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিতে বলা হয়।
তদন্তে ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছে, এতে কারো গাফিলতি আছে কি না এবং সার্ভারে সৃষ্ট সমস্যার প্রকৃতি ও তার গভীরতা কেমন এসব বিষয় খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়, সিডিবিএল’র সমস্যার প্রকৃতি ও স্বরূপ নির্ণয়, উদ্ভূত সমস্যার কারণ নির্ণয়, দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা বা ব্যর্থতা যদি থাকে তা নির্ধারণ, সর্বশেষ আপগ্রেডেশন সংক্রান্ত বিষয়, তদন্তকালে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান হয়ে থাকলে তা সঠিকভাবে হয়েছিল কি-না এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ও সিডিবিএল`র সঠিক অপারেশনের জন্য করণীয় বিষয় নিরূপণ।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, তদন্ত প্রতিবেদনে গত ৩০ জুলাইয়ের ঘটনার জন্য প্রাথমিকভাবে কারিগরি ক্রটিকে দায়ী করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ সমস্যার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।