পপুলার লাইফের ১১৮ কোটি টাকার অনিয়ম ব্যবস্থা নিতে পারবে আইডিআরএ

পপুলার লাইফের ১১৮ কোটি টাকার অনিয়ম ব্যবস্থা নিতে পারবে আইডিআরএ

জমি ক্রয়ে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কারণ দর্শানো নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলে উচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছে।

রোববার প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ আদেশ দেওয়‍া হয়।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৭ মার্চ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালকদের জমি কেনার নাম করে তসরুফ করা ১১৮ কোটি টাকা কেন কোম্পানি খাতে জমা দেওয়া হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়।

আইডিআরএর ওই নোটিশে আরো উল্লেখ করা হয়, জাল দলিলের মাধ্যমে পপুলার লাইফের চেয়ারম্যান, এমডি এবং পরিচালক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, মোহাম্মদ আক্তার পারভেজ চৌধুরী, কবির আহমেদ, মোঃ আক্তারুল হক, আসিফ রহমান, মোহাম্মদ শোয়েব, মোতাহার হোসেন ও সাইদুল ইসলাম শেয়ারহোল্ডারদের অর্থ আত্মসাতের লক্ষ্যে ৪০৪ কাঠা সরকারি জমি জবরদখলের পাঁয়তারা করেন।

এতে আরো জানানো হয়, রাজধানীর গুলশানের কড়াইল এলাকার এ সম্পত্তি ১৯৫৭ সাল থেকেই বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) নামে অধিগ্রহণ করা। বর্তমান বাজারে এর দাম আড়াই হাজার কোটি টাকা। তবে জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজে-কলমে এর দাম নির্ধারণ করা হয় ২৯৪ কোটি টাকা।

পপুলারকে দেয়া আইডিআরএর ওই নোটিশে আরও বলা হয়, ১১৮ কোটি টাকা এবং কথিত সম্পত্তি কেনার তারিখ থেকে বার্ষিক ১২ শতাংশ সুদসহ কোম্পানির খাতে জমা দিতে কেন আপনাদের বলা হবে না, আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তার কারণ দর্শাতে হবে। এ বিষয়ে ব্যক্তিগত শুনানি চান কিনা তাও জানাতে হবে।

পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের পক্ষ থেকে উক্ত নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে (রিট নাম্বার-৯২৮৫/২০১২) রিট দায়ের করা হয়।

রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ১৬ জুলাই উক্ত কারণ দর্শানোর নোটিশের কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে।

হাইকোটের স্থগিতাদেশ চ্যালেঞ্জ করে কর্তৃপক্ষ মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেট বিভাগে সিভিল পিটিশন (পিটিশন নম্বর- ১৮৯৮/২০১২) দাখিল করে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য চেম্বার জজ ৩১ জুলাই হাইকোর্ট বিভাগের স্থগিতাদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করে দেন এবং বিষয়টি প্রধান বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আদালতে শুনানির জন্য প্রেরণ করেন।

রোববার পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে সিভিল পিটিশনটি শুনানির পর আদালত ইতোপূর্বে দেওয়া চেম্বার জজের স্থগিতাদেশ বহাল রাখেন এবং হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন রিট পিটিশনটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আদেশ প্রদান করেন। এছাড়া একই স্থগিতাদেশ চ্যালেঞ্জ করে সরকারের পক্ষেও আপিল করলে উক্ত আপিলেও আদালত একই আদেশ প্রদান করেন।

আদালতের এ রায়ের ফলে জমি ক্রয়ে পরিচালকদের ১১৮ কোটি টাকার অনিয়মের বিষয়ে আইডিআরএর কারণ দর্শানো নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আর কোনো বাধা রইল না বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

অর্থ বাণিজ্য