সুষম সার উদ্ভাবনের আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর

সুষম সার উদ্ভাবনের আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর

ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপির সংমিশ্রণে সুষম সার উদ্ভাবনের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। সুষম সার উদ্ভাবন হলে কৃষকের শ্রম অপচয় কমবে বলে জানান তিনি।

রোববার দুপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে আন্তর্জাতিক সার উন্নয়ন সেন্টার আয়োজিত কৃষি উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ প্রকল্প (আপি) শীর্ষক কর্মশালা ও  গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ যন্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, “একই জমিতে ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি প্রয়োগ করতে কৃষকদের  বাড়তি শ্রম নষ্ট হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সার উন্নয়ন সেন্টারের ( আইএফডিসি) কাছে আহ্বান জানাবো তারা যেন সুষম সার উদ্ভাবন করে।”

“আমরা কৃষকের জন্য বেঁচে আছি। তাদের কষ্ট কোথায় বুঝি। তাদের আমরা মানুষ বলে মনে করি। সে কারণে তাদের সঙ্গে মানুষের মতো আচরণ করি।”

তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, “কৃষকের অসহায়ত্ব নিয়ে কেউ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আওয়ামী লীগ ‍কৃষকের অসহায়ত্বের সুযোগ নেয় না।”

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, “তাদের পরামর্শে সেচ এরিয়া বেড়েছে ঠিকই কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আর্সেনিক ছড়িয়ে পড়েছে।”

মন্ত্রী সরকারকে কৃষক ও দারিদ্রবান্ধব উল্লেখ করে বলেন, “আমরা সব সময় কৃষকের পাশে থেকেছি। তাদের বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হচ্ছে।”

ঈদে দরিদ্র লোকদের যাতে অন্যের কাছে হাত না পাততে হয় তার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে ঈদের আগে চাল বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মঞ্জুর হোসাইনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউএস এআইডির মিশন প্রধান রিচার্ড গ্রিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইএফডিসির আবাসিক প্রতিনিধি ইসরাত জাহান। অনুষ্ঠানে ৫০ জন কৃষককের মধ্যে গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ যন্ত্র বিতরণ করা হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস ও শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে কৃষি উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্প থেকে ৩৫ লাখ কৃষক উপকৃত হবেন। এতে সরকারের প্রায় ৮ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ মুহূর্তে দেশে ১৮ লাখ হেক্টর জমিতে ফসফরাস ও চার লাখ হেক্টর জমিতে পটাশিয়াম ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ কৃষক নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এতে করে মাটির পুষ্টি ব্যবস্থাপনায় মারাত্মক অসমতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া ছিটানো পদ্ধতিতে ইউরিয়া ব্যবহার ৬৫ শতাংশ নাইট্রোজেন অপচয় হচ্ছে। তাই গুটি ইউরিয়া পদ্ধতি ব্যবহারে ও কৃষকদের দক্ষতা বাড়াতে এই প্রকল্প কাজ করে যাচ্ছে।

আপি প্রথম পর্যায়ে বরিশাল অঞ্চলের ৯টি জেলা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের দুটি জেলায় শুরু করা হয়। পরে ওই অঞ্চলের আরো ১১টি জেলায় সম্প্রসারণ করা হয়েছে।

অর্থ বাণিজ্য