সেমিনার: ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য গড়ে তুলতে হবে

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক সর্ম্পক কার্যকর করতে হলে দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য গড়ে তুলতে হবে। তবে তার আগে দুই দেশের সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। একইসঙ্গে মনোভাবেও পরিবর্তন আনতে হবে। ভারতকে সংবেদনশীল পণ্যের তালিকা প্রত্যাহার করতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীল ব্র্যাক সেন্টারে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্যের কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক: নতুন সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বিশ্বব্যাংক। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।

সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে সংলাপে অংশ নেন বাণিজ্য সচিব গোলাম হোসেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুক, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান, মো. আশরাফুল হক, সাবেক সচিব সোহেল আহমেদ, মুজিবুর রহমান, ট্যারিফ কমিশনের ড. আবিদ খান, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ও জ্যেষ্ঠ গবেষক খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ সঞ্জয় কাঠুরিয়া এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সেলিম রায়হান।

অনুষ্ঠানে গওহর রিজভী বলেন, “ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য গড়ে তুলতে আরও বিশ্লেষণ করতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। তবে ভারতের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হোক আর না হোক আমাদের এক সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা ভারতের বিনিয়োগকে গুরুত্ব দিচ্ছি। ভারত যাতে এদেশে বিনিয়োগ বাড়ায় সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভারতের অনেক ব্যবসায়ী বিনিয়োগ করেছে। আরও অনেকে করতে আসছে।”

গওহর রিজভী ভারতের অনুমোদিত ১০০ কোটি ডলার ঋণসহায়তা প্রসঙ্গে বলেন, “ইতোমধ্যে ৮০ কোটি ডলারের প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ কোটি ডলারের অর্থ ছাড় করেছে ভারত। বাকি অর্থও ছাড় করবে।”

বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী সব এলাকায় সীমান্ত হাট শুরু করা দরকার বলে জানান তিনি।

“আমরা শুধু অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে থাকি। নিজের ভুল দেখি না।”

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “ভারতের সঙ্গে শুধু আমাদের পণ্য বাণিজ্য বাড়ালে হবে না। বাণিজ্যসহজীকরণ, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ বাড়ানো উচিত। এক কথায় বাণিজ্য কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।”

ড. ওসমান ফারুক বলেন, “শুধু ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ালে হবে না। আঞ্চলিক বাণিজ্য গড়ে তুলতে হবে। তবে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক শুধু অর্থনৈতিক বিষয় নয়। এটি রাজনৈতিক বিষয়ও বটে।”

ফারুক সোবহান বলেন, শুধু বাণিজ্য নয়, জোর দিতে হবে ভারতীয় বিনিয়োগে। তবে দুই দেশের রাজনীতিকে অবজ্ঞা করা যাবে না। অনেক সময় এটি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “নিজের উন্নয়ন নিয়ে নিজেকে ভাবতে হবে। এজন্য সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ দরকার।  সীমান্ত হাটগুলো কাজে দিচ্ছে না।”

অর্থ বাণিজ্য