মেয়েদের দীর্ঘায়ু হওয়ার রহস্য উন্মোচনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি মাছির ওপর পরিচালিত এ গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে এমন দাবিই করেছেন অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটি এবং ব্রিটেনের ল্যাঙ্কাস্টার ইউভার্সিটির গবেষকরা।
১৩টি পৃথক গ্রুপের মাছির পুরুষ ও স্ত্রী প্রজাতির মধ্যে তারা পরীক্ষা চালিয়েছেন। তাদের দাবি, তারা পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের বেশি দিন বাঁচার কারণ সম্ভবত তারা আবিষ্কার করতে পেরেছেন।
বিজ্ঞান সাময়িকী কারেন্ট বায়োলজিতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন এ দাবি করেছেন তারা। গবেষণায় মূলত প্রাণী কোষের ‘পাওয়ার হাউজ’ মাইটোকন্ড্রিয়ার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, মাইটোকন্ড্রিয়া শুধু মায়ের কাছ থেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া যায়, কখনোই বাবার দিক থেকে নয়। এ কারণে, পুরুষের আয়ু কমিয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী মিউটেশন (রূপান্তর) প্রতিহত করার কোনো উপায় নেই।
প্রায় সব প্রাণীর দেহকোষেই মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে। কোষের এ উপাদান খাদ্যকে রূপান্তরিত করে শরীরে শক্তি জোগায়।
গবেষণার ব্যাপারে মোনাশ ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. ডেমিয়ান ডাউলিং বলেন, “গবেষণায় দেখা গেছে, মাইটোকন্ড্রিয়ার ডিএনএ’র মধ্যে অংসখ্য মিউটেশন ঘটে। এ মিউটেশনই পুরুষের আয়ু কমিয়ে দেয় এবং দ্রুত বার্ধক্য আনে।”
তিনি আরো বলেন, “কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় হল, একই ধরনের মিউটেশন নারীর বার্ধক্যে কোনো প্রভাব ফেলে না।”
সব প্রাণীর কোষেই মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে। আর সব প্রজাতির মধ্যেই পুরুষের চেয়ে নারী জাতির দীর্ঘায়ু হওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সুতরাং এ ফলাফল প্রাণী জগতে আয়ুর লিঙ্গ ভেদ বিষয়ের রহস্য উদঘাটনে সাহায্য করবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
তবে আয়ুর ব্যপারে যে লিঙ্গভেদ দেখা যায় তা ব্যাখ্যার জন্য আরো অনেক ফ্যাক্টর বিবেচনা করতে হবে বলে মনে করছেন অনেক বিজ্ঞানী।
নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে আয়ুর কমবেশি হওয়ার জন্য শুধু মাইটোকন্ড্রিয়ার বিশেষ মিউটেশনই একমাত্র কারণ বলে মনে করছেন না বিজ্ঞানীরা।
তারা বলছেন, জীবনযাপন পদ্ধতি, সামাজিক এবং আচরণগত নানা বৈশিষ্ট্যও মানুষের বেঁচে থাকায় অনেক প্রভাব ফেলে।