শেখ হাসিনার ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন রোববার

শেখ হাসিনার ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন রোববার

রোববার থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক দুদিনব্যপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন। জাতিসংঘে গৃহীত রেজুলেশন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক তত্ত্বের উপর দু‘দিনব্যাপী  (৫ ও ৬ আগস্ট) এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার একটি হোটেলে ।

এই সম্মেলন ঘিরে দেশ-বিদেশে বিপুল সাড়া জাগিয়েছে। এতে পৃথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বের ৫৬ দেশের মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এই সম্মেলনে যোগ দিতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ২০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক ঢাকা সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার নিউইয়র্ক ত্যাগ করেছেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জাতিসংঘের ৬৬তম সাধারণ অধিবেশনের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ (ইমপাওয়ারিং পিপল) তত্ত্ব তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী সমাজ-রাষ্ট্রের সাতটি বিশেষ উপাদানের আন্তঃসম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশেষ তৎপরতার মাধ্যমে মানুষের আত্মউন্নয়ন, ক্ষমতায়ন ও স্থিতিশীল উন্নয়ন এবং শান্তি নিশ্চিত করার কথা বলেছেন।

শেখ হাসিনার এই তত্ত্বে মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য দারিদ্র বিমোচন, ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই, বৈষম্য নিরসন, বঞ্চনা রোধ, সকলের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সুবিধা বঞ্চিত মানুষকে সমাজের বিশেষ নজরে আনা, শ্রমবাজারে আগতদের দক্ষ করে গড়ে তোলার বলা হয়েছে।

এছাড়া শেখ হাসিনার তত্ত্বে শিক্ষার প্রসার এবং শ্রেণি বিভাজন ভিত্তিক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে সামগ্রিকভাবে গোটা জনগোষ্ঠীর সরকার পরিচালনায় ভূমিকা রাখার প্রয়াস চালানো এবং তাদের আন্তর্জাতিক আইন মান্য করার পাশাপাশি সকল ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামী  করে গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।

জাতিসংঘের ৬৬তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থাপিত ওই তত্ত্ব জাতীয়-আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। এই তত্ত্বে আরো বলা হয়- মানুষের আত্মউন্নয়ন হলে সে যে কোন ধরনের প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে পারে।

তাঁর এই তত্ত্বের মূল দর্শন হচ্ছে- দরিদ্র ও দারিদ্র অভিগামীতা থেকে মানুষের মুক্তি নিশ্চিত করা গেলে সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে রাষ্ট্র পরিচালনায় জনমতের প্রতিফলন উন্নয়ন যাত্রাকে আরো সুদৃঢ় করতে পারে। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রশেখ হাসিনার দর্শনের সঙ্গে একমত পোষণ করে রেজুলেশন পাশ করে।

‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক ঢাকা সম্মেলনে ৭টি কর্ম অধিবেশনে বিভিন্ন দেশের আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় ক্ষুধা ও দারিদ্র বিমোচন, বৈষম্য নিরসন, বঞ্চনা প্রতিরোধ, ব্যাপক কর্মসংস্থান, সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের বিশেষ নজরে আনা, মানব উন্নয়ন, সন্ত্রাস প্রতিরোধ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও অনুসিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।

প্রতিটি কর্ম অধিবেশনে একজন বিশেষজ্ঞ মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন। এই প্রবন্ধের ওপর বিশেষজ্ঞদের আলোচনার সার মর্মের ভিত্তিতে গ্রহণ করা হবে সার সংক্ষেপ।

রোববার সকালে হোটেল রূপসী বাংলায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাগত বক্তৃতা করবেন পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস। সূচনা বক্তৃতা করবেন ডা. দীপু মনি। বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন প্লেনারি সেশনে বক্তৃতা করবেন।

ড. আব্দুল মোমেন ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ তত্ত্বের ব্যাপারে গত এক বছরে জাতিসংঘে বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরবেন। জাতিসংঘের প্রথম সচিব (প্রেস) মামুন-অর-রশিদ পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তিতেতে বলা হয়েছে- বিভিন্ন মহলে এই তত্ত্বটি নন্দিত হয়েছে এবং সে বিষয়টি থাকছে তাঁর বক্তব্যে।

বাংলাদেশ