কাজ শেষ না হলেও নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় ২০১১-১২ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) প্রায় ১ কোটি টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা এ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেছেন।
ঠিকাদার সূত্রে জানা যায়, গত অর্থ বছরের শেষদিকে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্নস্থানে কালভার্ট, ইউ-ড্রেন, ফুটব্রিজ নির্মাণ, নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য নলকূপ স্থাপন, উপজেলা পরিষদের নতুন ও পুরনো প্রশাসনিক ভবন সংস্কার, ৪টি নতুন পায়খানা নির্মাণ, উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিস সংস্কারসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১২টি গ্রুপে প্রায় ১ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর।
চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে কাজগুলো শেষ করার শর্তে নির্বাচিত ঠিকাদারদের কার্যাদেশ দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত কাজগুলো শেষ হয়নি। অথচ ৩০ জুনের আগেই কাজগুলো সমাপ্ত দেখিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা, উপজেলা প্রকৌশলী এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা যোগসাজস করে প্রকল্পের সমুদয় টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ নিয়ে জলঢাকা উপজেলা প্রকৌশলী মতিয়ার রহমান বেশ অভিনব যুক্তি দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ৩০ জুনের মধ্যে খরচ দেখাতে না পারলে টাকা ফেরত যেতো। এ কারণে কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক ভবন সংস্কার, নতুন পায়খানা নির্মাণ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস সংস্কার ও সংযোগ রাস্তা নির্মাণে ১৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে তড়িঘড়ি করে আলাদা একটি টেন্ডার আহ্বান করে উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেন, উপজেলা প্রকৌশলী তার শ্বশুরবাড়ি এলাকা তারাগঞ্জ থেকে গোল্ডেন কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিয়ে নিজেই ঠিকাদারের দায়িত্ব পালন করছেন। এ কাজটিও কবে শেষ হবে, তা কেউ বলতে পারছেন না।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারওয়ার হোসেন টাকা উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গত বছর জুনের ২৫ তারিখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। এত অল্প সময়ে কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব নয় বলে প্রকল্পের সমুদয় টাকা উত্তোলন করে উপজেলা প্রকৌশলীর অনুকূলে বিডি করে রাখা হয়েছে।