এক বছরে ওটিসি মার্কেটে লেনদেন মাত্র ৭৩ লাখ

এক বছরে ওটিসি মার্কেটে লেনদেন মাত্র ৭৩ লাখ

পুঁজিবাজারে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে লেনদেনের জটিলতা রয়েই গেছে। ওটিসি মার্কেটে থাকা ৬৮টি কোম্পানির মধ্যে ২২টিতে গত এক বছরে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) ১ লাখ ৯৯ হাজার ৯৭০টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে মাত্র ৭৩ লাখ ১৩ হাজার ৩০৪ টাকায়। বাকি ৪৬টি কোম্পানির কোনও লেনদেন হয়নি।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে অ্যাপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস লিমিটেডের ৩৬ হাজার ৯০০টি শেয়ার ৪ লাখ ২১ হাজার ৩৯৫ টাকা, বাংলাদেশ ডায়িং অ্যান্ড ফিনিশিং লিমিটেডের ৪০টি শেয়ার ২ হাজার ৫৬০ টাকা, বিডি লাগেজের ৩০০টি শেয়ার আট হাজার ১৮৮ টাকা, বিডি জিপার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৪৫০টি শেয়ার ১৮ হাজার ৫০ টাকা, বেঙ্গল ফাইন কেমিক্যালসের ১৫৪টি শেয়ার আট হাজার ৯০২ টাকায়, বেঙ্গল বিস্কুট লিমিটেডের ২০টি শেয়ার এক হাজার ৪৬০ টাকা, বিডি মনোস্পুল পেপারের ২৫ হাজার ৮৮১টি শেয়ার ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ১০০ টাকা, এক্সসেলসিয়র সুজের চার হাজার ৭২৩টি শেয়ার দুই লাখ ৫০ হাজার ৯৯ টাকা, গচিহাটা একুয়াকালচার ফার্মস লিমিটেডের ৩০০টি শেয়ার ১৮ হাজার ৮৫০ টাকা, গলফ ফুডস লিমিটেডের ৬০০টি শেয়ার ৪৮ হাজার টাকা, লেক্সকো লিমিটেডের ১৫০টি শেয়ার ২১ হাজার ৫০০ টাকা, মেঘনা শ্রিম্প কালচার লিমিটেডের ২৪ হাজার ৭২০টি শেয়ার ১৫ লাখ ৩১ হাজার ৯৯০ টাকা, মিতা ট্রেক্সটাইল লিমিটেডের ৯০০টি শেয়ার ৫৫ হাজার ২৫০ টাকা, মডার্ন সিমেন্টের ১৫ হাজার ৫০০ শেয়ার ৫৩ হাজার ৪০০ টাকা, মুন্নু ফেব্রিকসের পাঁচ হাজার ৬৫০টি শেয়ার তিন লাখ ২০ হাজার ৯৭৫ টাকা, পদ্মা সিমেন্টের ৬৮ হাজার ৫০০টি শেয়ার ১০ লাখ ৫৮ হাজার ১০০ টাকা, পদ্মা প্রিন্টের এক হাজার ২০০টি শেয়ার ১৪ হাজার ৭৫০ টাকা, পেপার প্রসেসিংয়ের আট হাজার শেয়ার ছয় লাখ ৪০ হাজার টাকা, কাসেম সিল্কের তিন হাজার ৫০০টি শেয়ার ২৪ হাজার ৫০০ টাকা, শ্রীপুর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের ৩৫০টি শেয়ার ২৫ হাজার ৬৫০ টাকা, দি ইঞ্জিনির্য়াস লিমিটেডের ৬০০টি শেয়ার ৬৬ হাজার টাকা এবং ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েজ লিমিটেডের এক হাজার ৫৩২টি শেয়ার এক লাখ ৩৫ হাজার ৫৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এদিকে যে কোম্পানিগুলোর গত ছয় মাসে কোনও শেয়ার লেনদেন হয়নি সেগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রকৌশল ও খাদ্য খাতের মেটালেক্স করপোরেশন, বেমকো, আমাম সি ফুড, টিউলিপ ডেইরি, রাসপিট ইনকরপোরেশন, মোনা ফুড, বায়োনিক সি ফুড, রাঙামাটি ফুড, জার্মান-বাংলা ফুড।

পাট খাতের কোম্পানি সালেহ কার্পেট, বস্ত্র খাতের খাতের জিএমজি ইন্ডাস্ট্রিজ, ঈগল টেক্সটাইল, আরবি টেক্সটাইল, ডাইনামিক টেক্সটাইল, আশরাফ টেক্সটাইল, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, এম হোসেনগার্মেন্টস, সজীব নিটওয়্যার, চিক টেক্সটাইল রয়েছে এ তালিকায়।

বাকি কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতের পেট্রো সিনথেটিকস, ফার্মাকো, রহমান কেমিক্যালস, বিসিআই, ওয়াটা কেমিক্যালস, পারফিউম কেমিক্যালস, আলামিন কেমিক্যালস।

পেপার খাতের ম্যাক পেপার, ম্যাক এন্টারপ্রাইজ। আইটিসির রাসপিট ডাটা, চামড়া খাতের ফিনিক্স লেদার এবং রোজহেভেন বলপেন।

অন্যদিকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দুর্বল ভিত্তি আর লেনদেন প্রক্রিয়ার জটিলতার বাজারে চলছে এ অচলাবস্থা। যার কারণে ওটিসি মার্কেটে ক্রেতা পেতে কষ্ট হয় বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। এ মার্কেটে লেনদেনে ব্যাপক জটিলতা রয়েছে।

ক্রয় বিক্রয় করতে গেলে তৃতীয় পক্ষ হয়ে আসতে হয়। এরপরও শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয় করতে সময় নিচ্ছে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ। যার কারণে ওটিসি মাকের্ট ক্রেতাশূণ্য হয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন তারা।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ৫ অক্টোবর দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ওটিসি মার্কেট চালু করা হয়। শেয়ারবাজারে সবচেয়ে দ‍ুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোকে এই বাজারে তালিকাভুক্ত করা হয়।

বার্ষিক সাধারণসভা (এজিএম) না করা, শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়া এবং স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তি নবায়ন ফি বকেয়া পড়ায় বিভিন্ন সময়ে প্রধান বাজার থেকে কোম্পানিগুলোকে তালিকাচুত্য করা হয়।

এ ছাড়া কাগজের শেয়ারকে ইলেকট্রনিক শেয়ারে রূপান্তর বা ডিম্যাট না করার কারণেও কয়েকটি কোম্পানিকে ওটিসিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে ওটিসি মাকেটে কোম্পানির সংখ্যা ৬৮টি।

এ বিষয়ে ডিএসইর প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত বছর মূল মার্কেট খারাপ থাকার কারণে ওটিসি মাকেটেও লেনদেন কম হয়েছে। আশা করছি নতুন বছরে ওটিসি মার্কেটে লেনদেন ভালো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওটিসি মার্কেটের লেনদেন নির্ভর করে মূল মার্কেটের ওপর। মূল মার্কেট ভালো থাকলে ওটিসি মার্কেটও ভালো থাকবে।’

শাকিল রিজভী বলেন, ‘যেসব কোম্পানি ভাল পারফর্ম করবে, তারা অচিরেই মূল মার্কেটে ফিরে আসবে।’

অর্থ বাণিজ্য শীর্ষ খবর