এনসিসি ব্যাংকে ছাঁটাই আতঙ্ক

এনসিসি ব্যাংকে ছাঁটাই আতঙ্ক

ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকে (এনসিসি ব্যাংক) গণঁছাটাইয়ের ষড়যন্ত্র চলছে। এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন ব্যাংকটিতে কর্মরত বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ব্যাংকটির জনসংযোগ বিভাগ।

বুধবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, ছাঁটাইয়ের লক্ষ্যে এনসিসি কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এজন্য সিরাজুল ইসলামকে তিন মাসের চুক্তিতে কনসালট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ইস্টার্ন ব্যাংক (ইবিএল) থেকে নিয়ে আসা সিরাজুল ইসলাম ছাঁটাই বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন।

ওই কর্মকর্তা জানান, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থাইল্যান্ড থেকে তৈরি করে নিয়ে আসা হয়েছে। উধ্বর্তন অফিসারদের এক ঘণ্টায় ৩০০টি এবং জুনিয়র অফিসারদের একই সময়ে ১৫০টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার নিয়ম করা হয়েছে। এই ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট টেস্টে’ কেউ অকৃতকার্য হলেই তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হবে।

এদিকে, ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে কর্মীরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা জানান, এরই মধ্যে তারা লিফলেট বিলি করেছেন।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ছাঁটাইয়ের মূল হোতা হিসেবে কাজ করছেন ব্যাংকটির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নুরুন নেওয়াজ সেলিম।

এ ব্যাপারে ব্যাংকটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর নুরুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা তিনি পাবলিক জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

জানা গেঝে, গত ২৪ জুলাই এনসিসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জনপ্রশাসন বিভাগ থেকে সব শাখা অফিসে লিখিতভাবে এ ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই ব্যাংকের বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

আরেক কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। শুনেছি, পরীক্ষায় পাস করতে না পারলে ছাঁটাই করা হবে। এই অবস্থায় চাকরি হারালে কোথায় যাব?” একই অনুভূতি প্রকাশ করেছেন আরও কয়েকজন।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, খরচ কমানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছে এনসিসি ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে পুরনো ও তুলনামূলকভাবে অদক্ষ কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজন্যই ছাঁটাই বিশেষজ্ঞ সিরাজুল ইসলামকে নিয়োগ দিয়েছে ব্যাংকটি।

জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) মনিরুজ্জামান টিপু বলে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ছাঁটাই হচ্ছে, খবরটি একদম মিথ্যা। গত দুই বছরে অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগে ছাড়া একটিও ছাঁটাই হয়নি। আর কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তাকে অবশ্যই ছাঁটাই হবে।”

তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০০০ জনবল রয়েছে। এর মধ্যে কাউকেই ছাঁটাই করা হয়নি।” তবে তিনি স্কিল ডেভেলপমেন্ট টেস্টে স্বীকার করেন।

সিরাজুল ইসলাম সম্পর্কে তিনি বলেন, “দুই মাস হলো তিনি আমাদের ব্যাংকে যোগ দিয়েছেন। এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি মানবসম্পদ বিভাগে কাজ করছেন।”

এদিকে বিতরণ করা লিফলেটে বলা হয়েছে, “ব্যাংক বাঁচাও নিজেকে বাঁচাও, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা কর”। এতে ১৯ বছরের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার জন্য স্বৈরাচারী কিছু নির্বাহী কর্মকর্তা ও অসাধু চেয়ারম্যানের অপকর্মের হাত থেকে ব্যাংককে বাঁচানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

অর্থ বাণিজ্য