পরিশোধিত জ্বালানি তেল ক্রয়সহ দশটি দরপত্র প্রস্তাব অনুমোদন

সাড়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল ক্রয়ের ছয়টিসহ দশটি দরপত্র প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব নূরুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন।

নূরুল করিম জানান, চলতি বছরের জুলাই-ডিসেম্বর প্রান্তিকের জন্য ছয়টি দেশ থেকে ১৬ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি (ডিজেল, অকটেন ও কেরোসিন) তেল ক্রয় করা হবে এবং এজন্য প্রিমিয়ামসহ মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫১ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। আমদানিতব্য এ জ্বালানি তেলে প্রতি ব্যারেল ডিজেলের জন্য ৩ দশমিক ৮০ ডলার ও অকটেনে ৭ দশমিক ৩৫ ডলার ও কেরোসিনে ৪ দশমিক ৮০ ডলার প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়েছে।

যে ছয়টি দেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে এর মধ্যে কুয়েতের কুয়েত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (কেপিসি) থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল (ডিজেল) ও ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন জেট এ-১ (অকটেন) আমদানি করা হবে। আর এতে মোট ব্যয় হবে ৫২ কোটি ৪৬ লাখ ৪৫ হাজার ডলার।

মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস ট্রেডিং কর্পোরেশন (পেটকো) থেকে মোট ৪ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ৩ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল, ৭০ হাজার মেট্রিক টন অকটেন ও ৪০ হাজার টন কেরোসিন রয়েছে। এজন্য মোট ব্যয় হবে ৩৮ কোটি ৮০ লাখ ৪৯ হাজার ডলার।

চীনের পেট্রোচায়না ইন্টারন্যাশনাল (সিঙ্গাপুর) পিটিই লিমিটেডথেকে মোট ৯০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ৭৪ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল ও ১৬ হাজার মেট্রিক টন অকটেন রয়েছে। এজন্য মোট ব্যয় হবে ৮ কোটি ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার ডলার।

ফিলিপাইনের পিনোক এক্সপ্লোরেশন কর্পোরেশন থেকে মোট ১ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ১ লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল ও ৪৮ হাজার মেট্রিক টন অকটেন রয়েছে। এজন্য মোট ব্যয় হবে ১৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭৮ হাজার ডলার।

মিশরের মিডল-ইস্ট অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড (মিডর) থেকে মিডিয়াম রেঞ্জ (এম আর) জাহাজের মাধ্যমে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ও লার্জ রেঞ্জ (এল আর) জাহাজের মাধ্যমে ২ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল (ডিজেল) আমদানি করা হবে। এজন্য মোট ব্যয় হবে ২৭ কোটি ৬ লাখ ৩৬ হাজার ডলার। সংযুক্ত আরব আমিরাতের এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি (এনোক) থেকে মিডিয়াম রেঞ্জ (এম আর) জাহাজের মাধ্যমে ৯০ হাজার মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল (ডিজেল) আমদানির জন্য মোট ব্যয় হবে ৮ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার মিলিয়ন ডলার।

বৈঠকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ চলতি অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার টন পটাশ সার আমদানি, নদী ড্রেজিং-এর জন্য তিন সেট ড্রেজার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ক্রয়, মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হারবার এলাকায় ড্রেজিং শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেলে ৪১ দশমিক ৯৬ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং কাজ সম্পাদনের দর প্রস্তাব এবং বাস্তবায়নাধীন পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে মাওয়া ও জাজিরা কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড কর্তৃক মাটি ভরাট করে উন্নতকরণ কাজের অতিরিক্ত কাজ (ভেরিয়েশন অর্ডার-১) অনুমোদন।

এগুলোর মধ্যে চলতি অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার টন পটাশ (এমওপি) সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৮৯ কোটি ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। সরকারি পর্যায়ে বেলারুশিয়ান পটাশ কোম্পানী (বিপিসি) থেকে এ সার আমদানি করবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। ৩০ হাজার মেট্রিক টন করে ১৩টি লটে এ সার আমদানি করা হবে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘বাংলাদেশের নদী ড্রেজিং-এর জন্য ড্রেজার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ক্রয়’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় তিন সেট যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৫৫ কোটি ৩১ লাখ ৬২ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে আনন্দ শিপইয়ার্ডকে মনোনীত করা হয়েছে।

মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হারবার এলাকায় ড্রেজিং শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেলে ৪১ দশমিক ৯৬ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং কাজ সম্পাদনের জন্য সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মনোনীত হয়েছে মালয়েশিয়ান প্রতিষ্ঠান ইনাই কিয়ারা এসডিএন বিএইচডি। এ কাজে ব্যয় হবে ১২৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

বাস্তবায়নাধীন পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে মাওয়া ও জাজিরা কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড কর্তৃক মাটি ভরাট করে উন্নতকরণ কাজের অতিরিক্ত কাজ (ভেরিয়েশন অর্ডার-১) বাবদ ১৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় অনুমোদন দেওয়া হয়।

অর্থ বাণিজ্য