একশ’টি কৃষিপণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশ ছাড়াও বাংলাদেশে ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’ সুবিধা পেতে যাচ্ছে নেপালি নাগরিকেরা।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-নেপাল সচিব পর্যায়ের চতুর্থ নিয়মিত বৈঠকে ঢাকার পক্ষ থেকে সোমবার এ কথা জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নেপালি নাগরিকদের ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’ যাতায়াতের জন্য ইতোমধ্যে নতুন নীতিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ঢাকা।
সোমবার নেপালের বাণিজ্য ও সরবরাহ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব নাইন্দ্র প্রসাদ উপাধ্যায় বাংলাদেশের উদ্যোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, “ঢাকা নেপালকে একশ’টি পণ্যের ব্যাপারে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা দিয়েছে।”
ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বন্ধনের কারণে ভারত সফরের জন্য নেপালিদের কোনো ভিসা লাগে না। আর এ অঞ্চলের মধ্যে সিংগাপুরের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নেপালিদের ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’ প্রবেশের অনুমতি দিতে যাচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য এবং পর্যটন উৎসাহিত করার মাধ্যমে আঞ্চলিক সংহতি প্রতিষ্ঠায় এ অঞ্চলের মানুষের স্বাধীন পর্যটন নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে বিবেচনা করা হয়। সে হিসাবে বাংলাদেশ এক ধাপ এগিয়ে গেল।
নেপাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নেপাল টমেটো এবং মসুর ডালের মতো কৃষিপণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা চেয়ে আসছে। যেখানে নেপালি মসুর ডালের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এ ডালের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্বেও উচ্চহারে শুল্ক নির্ধারণের কারণে ব্যবসায়ীদের সমস্যার মুখে পড়তে হয়। কিন্তু এখন ফল ও সবজির মতো কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে নেপাল।
নেপাল মূলতঃ মসুর ডাল, খৈল, এলাচ, গম, সবজি বীজ এবং নুডলস বাংলাদেশে রফতানি করে থাকে। আর এ দেশ থেকে আমদানি করে- শিল্পকারখানার কাঁচামাল, রাসায়নিক, ফেব্রিক্স ও টেক্সটাইল পণ্য, পাটজাত পণ্য এবং ইলেট্রিক ও ইলেকট্রনিক পণ্য।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে নেপালের পক্ষে ১৫ সদস্যের এক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য সচিব লালমানি জোসি। আর বাংলাদেশের আট সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য সচিব মো. গোলাম হোসেন। তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে মঙ্গলবার আবারো বৈঠকে বসবেন বলে জানা গেছে।
সোমবারের বৈঠক শেষে যুগ্মসচিব উপাধ্যায় বলেছেন, “আগাম ব্যবস্থা, হীমাগার এবং সীমান্তে গুদামঘর নির্মাণের পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। সেই সঙ্গে কাঁকড়ভিটা-পানিটাঙ্কি-ফুলবাড়ী-বাংলাবন্ধ করিডোর হয়ে বাংলাদেশের বন্দর পর্যন্ত নেপালি পণ্যবাহী ট্রাকের পূর্ণ যাতায়াত নিশ্চিত করার বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে।”
উল্লেখ্য, যুগ্ম-সচিব নাইন্দ্র প্রসাদ উপাধ্যায় বাংলাদেশ-নেপাল ট্রানজিট ইস্যু নিয়ে গঠিত নেপালি টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান।