জাবি শিক্ষক অধ্যাপক গোলাম হোসেনের বর্ণাঢ্য জীবন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম হোসেন ছিলেন বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী।

তিনি কয়েকটি বই লিখেছেন যার অধিকাংশ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতির ওপর। এছাড়া দেশ ও বিদেশে বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত অনুচ্ছেদ সমুহও ছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে। ১৯৮৪ সালে তিনি ভারতের রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রিও নিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল: একটি রাজনৈতিক বিশ্লেষণ বিষয়ের ওপর।

অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম হোসেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওপর তার ৩১ গবেষণাপত্র দেশি বিদেশি বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম হোসেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি জিয়াউর রহমান সম্পর্কেও আলোচনা করেছেন তার বই ও গবেষণাপত্রের মাধ্যমে।

অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম হোসেনের লেখা বই সমুহের মধ্যে রয়েছে, জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি: একটি সামরিক শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ট্রান্সফরমেসন(১৯৮৮), সিভিল বাংলাদেশে সামরিক সম্পর্ক: একটি তূলনামূলক স্টাডি(১৯৯১), বাংলাদেশ: সরকার ও রাজনীতি(১৯৯২), স্থানীয় শাসন এবং বাংলাদেশে দারিদ্র্য হ্রাস(২০০৭)।

শিক্ষা ও গবেষণার জন্য অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম হোসেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে, গ্রট ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, বেলজিয়াম, হল্যান্ড, সুইডেন, ডেনমার্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর।

অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম হোসেন বাংলাদেশ সরকারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। ১৯৯২-১৯৯৩ সেশনে তিনি বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টারের গর্ভনিং বোর্ডের সদস্য ছিলেন। ১৯৯২-১৯৯৬ সেশনে তিনি বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ছিলেন।

অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম হোসেন ১৯৯৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক হন। ১৯৯২ সালের জুলাই থেকে  ১৯৯৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-রেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন। ১৯৯০ সালের আগস্ট থেকে  ১৯৯৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি জাবির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালের নভেম্বর  থেকে ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি জাবির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৮৫ সালের অক্টোবর থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। ২০০২ সালে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ১৯৮৪ সালের অক্টোবর থেকে  ১৯৮৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্টারটেইজিক স্টাডিজের গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন।

তিনি ১৯৮৬-১৯৯৭ সেশনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন।

শিক্ষাগত দিক থেকেও অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম হোসেন ছিলেন স্বয়ংসম্পূর্ন। তিনি ১৯৭০ সালে তিনি কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা দেন। ১৯৭২ সালে তিনি কাপাশিয়া কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা দেন।

১৯৭৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মেধার অনুক্রমে ৪র্থ স্থান অধিকার করেন(পরীক্ষার ১৯৭৭ সালে অনুষ্ঠিত হয়)। ১৯৭৬ সালে তিনি একই বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করেন(পরীক্ষার ১৯৭৮-৭৯ সালে অনুষ্ঠিত)।

১৯৮৪ সালে তিনি ভারতের রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল: একটি রাজনৈতিক বিশ্লেষণ বিষয়ের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও হেইদেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশের রাজনীতি এবং উন্নয়ন বিষয়ে কোর্স করিয়েছেন। এছাড়া তিনি SOAS in London, Kobe Gakuin University in Japan, Berlin Humboldt, Erfurt and Freiburgh Universities in Germany, Rajasthan University in India and Connecticut University at Storrs in the USA বিশ্ববিদ্যালয় সমুহে অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।

বাংলাদেশ