প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে আমরা বিদ্যুৎ দেব, আলো জ্বলবে। কারণ ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করব। আর ২০২০ সাল জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী। কাজেই সেটিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের ২০০৮ সালের যে নির্বাচন, সেই নির্বাচনের ইশতেহারে আমরা স্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলাম। রূপকল্প দিয়েছিলাম।
আজ রবিবার সকাল ১০টায় ৭৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিওকনফারেন্সের মাধ্যমে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি বেসরকারিভাবে এক সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করায় সারাদেশের মানুষ আজ সুবিধা পাচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে উন্নয়ন কাজের যথেষ্ট ক্ষতি হলেও বাংলাদেশ কারও কাছে হাত পেতে চলছে না। আগেরবার সরকারে এসে যে কয়টা ভালো কাজ করেছিলাম তার সবগুলোর জন্য মামলা খেয়েছিলাম। কিন্তু তবুও থেমে থাকিনি।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ খরচ হয়, মাত্র তার একাংশ গ্রাহককে দিতে হয়। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রতিটি মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি সঞ্চালন লাইন বাড়ানোর কাজও করে যাচ্ছে সরকার। উৎপাদন খরচ কমাতে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের সাশ্রয়ী হতে হবে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার গত ১২ বছরে বিদ্যুৎ খাতে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
উদ্বোধন করা বিদ্যুৎকেন্দ্র পাঁচটি হলো- হবিগঞ্জের জুলদায় বিবিয়ানা-৩৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রাম ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ইউনিট-২, নারায়ণগঞ্জে মেঘনাঘাট ১০৪ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট, বাগেরহাটে মধুমতি ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সিলেটের ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে উত্তরণ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হল থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ-বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াসিকা আয়েশা খান, জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিসুর রহমান, বিদ্যুৎসচিব মো. হাবিবুর রহমান ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। গণভবন থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০০৯ সালে কাজ শুরুর পর সরকার ২০ হাজার ২৯৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ১১৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। ২০২১ সাল নাগাদ ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে এরই মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে।