স্টার সিনেপ্লেক্সে চলছে ‘হুমায়ূন চলচ্চিত্র’

স্টার সিনেপ্লেক্সে চলছে ‘হুমায়ূন চলচ্চিত্র’

অন্যভুবনে চলে গেছেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদ। তবে তার নির্মিত সাহিত্যকর্ম ও চলচ্চিত্রের মধ্যে তিনি বেচে আছেন এবং বেঁচে থাকবেন। হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে শুরু হয়েছে হুমায়ূন চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।

শুক্রবার থেকে পুরো সপ্তাহ জুড়ে স্টার সিনেপ্লেক্সে হুমায়ূন চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে দেখানো হচ্ছে হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত চারটি ছবি  ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ ও ‘আমার আছে জল’।

শ্রাবণ মেঘের দিন

সেলুলয়েডে হুমায়ুন আহমেদের দ্বিতীয় নির্মাণ ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’। ১৯৯৯ সালে নির্মিত এ ছবিকে অনেকেই হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে চিহ্নিত করেন। নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা নুহাশ চলচ্চিত্রের ব্যানারে এ ছবিটিও ছিল হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের কাহিনী আর সঙ্গীত প্রধান এ ছবিটি দেখতে সে সময় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর দর্শক সিনেমা হলে ভিড় জমায়। এতে অভিনয় করেন জাহিদ হাসান, মাহফুজ আহমেদ, মেহের আফরোজ শাওন, মুক্তি, গোলাম মুস্তফা, আনোয়ারা, শামীমা নাজনীন, সালেহ আহমেদ, ডা. এজাজুল ইসলাম ও আরো অনেকে।

‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবির গানগুলোর মধ্যে কিছু ছিল লোকজ গান, অন্যগুলো ছিল হুমায়ূন আহমেদের লেখা। মকসুদ জামিল মিন্টুর সঙ্গীত পরিচালনায় এসব গানের বেশ কটি আজও জনপ্রিয় হয়ে আছে । যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- একটা ছিল সোনার কন্যা মেঘবরণ কেশ, আমার গায়ে যতো দুঃখ সয়, শুয়াচান পাখি আমার প্রভৃতি।

‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবিটি ১৯৯৯ সালে ৭টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। শাখাগুলো হচ্ছে- শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (জাহিদ হাসান), শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা (গোলাম মুস্তফা), শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক (মকসুদ জামিল মিন্টু), শ্রেষ্ঠ গীতিকার (রশীদউদ্দিন আহমেদ), শ্রেষ্ঠ গায়ক (সুবীর নন্দী), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক (মাহফুজুর রহমান খান) ও শ্রেষ্ঠ শব্দ গ্রাহক (মফিজুল হক)।

শ্যামল ছায়া

ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় ২০০৫ সালে হুমায়ুন আহমেদ নির্মাণ করেন ‘শ্যামল ছায়া’ ছবিটি। এ ছবিটিতে মুক্তিযুদ্ধকে তিনি ভিন্ন আঙ্গিকে সেলুলয়েডে তুলে ধরেন। একাত্তরে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পুরো জাতির মধ্যে যে দেশপ্রেম আর একতা তৈরি হয়েছিল তাই ছিল এ ছবির প্রধান প্রতিপাদ্য। পাশাপাশি তুলে ধরা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা। এতে অভিনয় করেন রিয়াজ, শাওন, হুমায়ূন ফরীদি, তানিয়া আহমেদ, চ্যালেঞ্জার, ডা. এজাজুল ইসলাম প্রমুখ।

মুক্তিযুদ্ধের ছবি ‘শ্যামল ছায়া’ বিশ্ব চলচ্চিত্রের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার অস্কারে বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে।

নয় নম্বর বিপদ সংকেত

হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত সম্পূর্ণ হাস্যরসের ছবি ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত এ ছবিকে নির্মাতা নিজেই অর্থহীন ছবি বলে উল্লেখ করেছেন। একজন ধনাঢ্য বয়স্ক ব্যক্তি হঠাৎ করে তার আপনজনদের কাছে পেতে চান। তাদের এক করা তার জন্য হয়ে উঠে কঠিন। সবাইকে তার মৃত্যু সংবাদ দিয়ে একত্রিত করা হয়। ঘটতে থাকে একের পর এক মজার মজার ঘটনা।

সম্পূর্ণ বিনোদনধর্মী এ ছবিতে অভিনয় করেন  রহমত আলী, তানিয়া আহমেদ, রুপক, মিঠু, ডা. এজাজ আহমেদ, ফারুক আহমেদ প্রমুখ।

আমার আছে জল

হুমায়ূন আহমেদের পাঠক নন্দিত উপন্যাস ‘আমার আছে জল’ । নুহাশ চলচ্চিত্রের প্রযোজনায় এ ছবির কাহিনী, সংলাপ, চিত্রনাট্য, গীত রচনা, শিল্প নির্দেশনা ও পরিচালনা করেছেন হুমায়ুন আহমেদ নিজেই। সিলেটের মনোরম লোকেশনে চিত্রায়িত এ ছবিতে একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা অবকাশ যাপন আর ত্রিভুজ প্রেমের গল্প তুলে ধরা হয়। ছবিটিতে অভিনয় করেন বিদ্যা সিনহা মিম, ফেরদৌস, জাহিদ হাসান, শাওন, পীযূষ বন্দোপাধ্যায়, সালেহ আহমেদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ, এজাজুল ইসলাম, মুনিরা মিঠু, মাজনুন মিজান, পুতুল, রুদ্র, ওয়াফা প্রমুখ।

২০০৮ সালে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি ‘আমার আছে জল’ দু’টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। শাখা দু’টি হচ্ছে- শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক (মাহফুজুর রহমান খান) ও শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী (মৃধা ইবশার নাওয়ার ওয়াফা)।

বিনোদন