দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্ব ব্যাংক ও জাইকার প্রেসিডেন্টের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, তা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে জানিয়েছেন জাপানি সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকায় জাইকার মিশন প্রধান তাকাও তোদাসহ কর্মকর্তারা সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।
ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিং এবং জাইকা প্রেসিডেন্ট আকিহিতো তানাকার মধ্যে বৈঠকের বিষয়বস্তু তারা মন্ত্রীকে জানান বলে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “তারা রিপোর্ট (জাইকার দুই প্রতিনিধি) করতে এসেছিলেন। কিন্তু তোমাদের (সাংবাদিক) বলার মতো কিছু এখনো আসেনি।”
তাাকাও তোদা বলেন, “এটা একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলা ঠিক হবে না।”
সকালে একই বিষয়ে মুহিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “পদ্মা সেতু নিয়ে জাইকা ও বিশ্ব ব্যাংকের বৈঠক আজ (বৃহস্পতিবার) ভোরে শেষ হয়েছে, বৈঠকের ফলাফল এখনো আমরা জানি না।”
২৯ জুন বিশ্ব ব্যাংক ২৯০ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১২০ কোটি ডলারের অর্থায়ন চুক্তি বাতিল করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে এ সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। জাতীয় সংসদে এর রূপরেখাও তিনি তুলে ধরেন।
একই সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনারও আহ্বান জানায় সরকার।
১৯ জুলাই মুহিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে চলমান জটিলতার অবসানে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করতে জাইকা প্রেসিডেন্টকে আমি তৎপরতা চালাতে অনুরোধ করেছি।”
পদ্মা সেতু প্রকল্পে জাইকার দেওয়ার কথা ৪০ কোটি ডলার।
দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে দাবি করে বিশ্ব ব্যাংক তাদের অর্থায়ন বাতিল করলেও জাইকা এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তবে অর্থমন্ত্রী বরাবরই আশা করে আসছেন, বিশ্ব ব্যাংক নিজেদের ‘ভুল’ বুঝতে পেরে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।
বিশ্ব ব্যাংকের শর্ত পূরণের অংশ হিসাবে গত সোমবার মন্ত্রী পদ ছাড়েন সৈয়দ আবুল হোসেন, যিনি পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে টানাপোড়েন শুরুর সময় যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। একইসঙ্গে তখনকার সেতু বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়াকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার পর বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মুহিত।