শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে বাড়িভাড়া বৃদ্ধি: মন্ত্রী

শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে বাড়িভাড়া বৃদ্ধি: মন্ত্রী

অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়িভাড়া বৃদ্ধিকে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক অসন্তোষের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন শ্রম ও প্রবাসী কল্যণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বুধবার সচিবালয়ে তৈরি পোশাক খাতের দেশি ও বিদেশি ক্রেতা এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে শ্রমমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “বাড়িভাড়া বছরে দু’তিনবার পর্যন্ত বাড়ছে। এতে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। এ মুহূর্তে বেতন বাড়ানোর চেয়ে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণেই সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ বেতন বাড়ালে আবারো বাড়িভাড়া বাড়বে।”

‘বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন’ কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ইতোমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান।

তিনি বলেন, “ডিসিরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। অবৈধ ও অন্যায়ভাবে বাড়িভাড়া বাড়ালেই তারা ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজনে তারা ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করবেন।”

তবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য নাকচ করে দেন মন্ত্রী।

গতমাসে আশুলিয়ায় টানা শ্রমিক অসন্তোষের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা বলেন, তার দেশের ক্রেতারা বাংলাদেশের পোশাক খাতের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ অবস্থা চলতে থাকলে তারা এ দেশে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চাইবেন না।

এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ মনে করছেন, এখানে পরিস্থিতি অনেক খারাপ। এখানে ব্যবসা করার মতো অবস্থা নেই। এ বিষয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এ খাতে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই- এমনটা তারা মনে করেন না। বরং এখানে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব বলেই তারা মনে করছেন।”

তবে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

শ্রমিকদের বাড়িভাড়া সমস্যার বিষয়টি ‘অত্যন্ত মানবিক সমস্যা’ অভিহিত করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার শ্রমিকদের জন্য ‘ডরমেটরি’ নির্মাণে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে থাকা এ টাকা মাত্র এক শতাংশ সুদে মালিকরা নিতে পারবেন। এ ঋণ নিয়ে তারা শ্রমিকদের আবাসনের ব্যবস্থা করবেন।

“এছাড়া শ্রমিকদের জন্য সরকার রেশনিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। খাদ্য বিভাগ এ রেশনিং কার্যক্রমের প্রক্রিয়া শুরু করছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের রেশনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হবে।”

শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যা প্রসঙ্গে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “দেশে শুধু আমিনুলই খুন হননি, আরো অনেকে নিহত হচ্ছেন। সরকার প্রতিটি হত্যাকাণ্ডই সমান গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত ও ঘাতকদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে সৌদি কর্মকর্তার ঘাতকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমিনুলের ঘাতকরা গ্রেপ্তার হলে তাদেরও সবার সামনে উপস্থাপন করা হবে।”

শ্রম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মিকাইল শিপার, এফবিসিসিআই সভাপতি একে আজাদ, বিজিএমইএ সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এবং বিজিএমইএর ক্রেতা বিষয়ক পরামর্শক জেনিফার জাব্বারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রেতারা মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন।

অর্থ বাণিজ্য