বাংলাদেশবিরোধী কূট-ষড়যন্ত্র এখনো থেমে যায়নি : টেলিযোগাযোগমন্ত্রী

বাংলাদেশবিরোধী কূট-ষড়যন্ত্র এখনো থেমে যায়নি : টেলিযোগাযোগমন্ত্রী

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বাংলাভাষাভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে নেতৃত্বশূন্য করার মধ্য দিয়ে অকার্যকর একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার কূট-ষড়যন্ত্র থেমে নেই।

তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে ‘হত্যাপরবর্তী’ ৪৯ দিনের মাথায় জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকেও হত্যা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ নেতৃত্বশূন্য হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ-নেতৃত্ব ষড়যন্ত্রকারীদের বাংলাদেশের বাঙালি জাতি-রাষ্ট্রবিরোধী অপচেষ্টা সফল হতে দেয়নি। তবে, ওদের ষড়যন্ত্র এখনো থেমে যায়নি।

মোস্তাফা জব্বার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড আয়োজিত এক ভার্চুয়্যাল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন, ‘দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে লড়াই-সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতার যুদ্ধ এবং সাড়ে তিন বছরের রাষ্ট্র পরিচালনায় বঙ্গবন্ধু যে নীতি ও আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন, তা পৃথিবীতে বিরল। তিনি প্রচলিত ধারণা বদলে দিয়ে বাংলা ভাষাভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করায় পাকিস্তান ও তাদের এদেশীয় দোসর এবং সা¤্রাজ্যবাদী আন্তর্জাতিক পরাশক্তি এই পরিবর্তন মেনে নিতে পারেনি বলেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যা করে। বাংলাদেশকে নেতৃত্বেশূন্য করার মধ্য দিয়ে এই রাষ্ট্রটিকে হত্যা করার লক্ষ্যেই ওরা জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে।’ ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা একই পরিকল্পনার ধারাবাহিকতার ফসল বলেও তিনি জানান।

টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, একই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ২১ বার হত্যার চেষ্টা করেছে। ওদের ষড়যন্ত্র এখনো থেমে যায়নি।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন সাবেক ছাত্রনেতা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভাষ সিংহ রায়।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহাদত হোসেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়েও বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি কাঠামো দাঁড় করিয়েছেন, প্রাথমিক ও কারিগরি শিক্ষার উপর জোর দিয়েছিলেন, পরমাণু শক্তি কমিশন গঠন, টিএন্ডটি বোর্ড স্থাপন করেছেন, উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র স্থাপন করেছেন। কুদরত-ই-খোদা শিক্ষা কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষার আমুল পরিবর্তনের সূচনা করে ছিলেন। দেশের প্রায় প্রতিটি সেক্টরকে যুগের চাহিদা মেটানোর উপযোগী করে গড়ে তোলার উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেন। বস্তুতঃ একবিংশ শতাব্দির আজকের জীবন যাপন এবং ’৪১ সালে যেখানে বাংলাদেশ পৌঁছাবে তার বীজ বপন করে গেছেন তিনি।

টেলিযোগাযোগামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সতেরো বছরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ বেয়ে তা অংকুরিত করে বৃক্ষে রূপান্তরিত করেছেন।

তিনি সাবমেরিন ক্যাবলকে বাংলাদেশের লাইফ লাইন উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় ডিজিটাল হাইওয়ে গড়ে তুলতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সংস্থাকে দেশ প্রেমের মহান ব্রত নিয়ে কাজ করতে হবে।

সুভাষ সিংহ রায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ এবং বৈশ্বিক রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলা ও বাঙালির অহংকার’। বঙ্গবন্ধু বিশ্বের শোষিত মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন।

ন্যাম সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ফিডেল ক্যাস্ট্রোসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা তুলে ধরে সুভাষ সিংহ বলেন, যত দিন যাবে বঙ্গবন্ধু নতুন প্রজন্মের কাছে প্রাসঙ্গিক হয়ে পরিস্ফুটিত হবেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বঙ্গবন্ধুকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আরো বেশি করে তুলে ধরার মাধ্যমে জাতিকে গৌরবান্বিত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
খবর বাসস

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর