লবিং গ্রুপ গড়তে অভিন্ন প্লাটফর্মে ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলো

লবিং গ্রুপ গড়তে অভিন্ন প্লাটফর্মে ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলো

বিশ্বের ইন্টারনেট জায়ান্টরা প্রথমবারের মত নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষায় অভিন্ন প্লাটফরমে এসে দাড়াঁচ্ছেন। গুগল, ফেসবুক, আমাজন এবং ই বেইয়ের মত ইন্টারনেটভিত্তিক বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নীতি নির্ধারণে নিজেদের প্রভাব বজায় রাখতে একটি শক্তিশালী লবিং (তদবির) গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে।

ইন্টারনেট অ্যাসোসিয়েশন নামে অভিহিত গ্রুপটি আগামী সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোর মুখ দেখবে বলে জানিয়েছেন এর উদ্যোক্তারা। রাজধানী ওয়াশিংটনে এ লবিং গ্রুপটি নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও আইন প্রণেতাদের হাতে রাখতে কাজ করবে বলে জানা গেছে। সোজা কথায় আইনগত এবং বাণিজ্যিক সুবিধা লাভের জন্য আইন প্রণেতাদের প্রলুব্ধ করতে কাজ করবে তারা।

এরইমধ্যে গুগল এবং ফেসবুক নিজেদের মত করে রাজনৈতিক লবিং বাবদ ওয়াশিংটনে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের পেছনে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে আসছে।

যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের তদবির বা লবিং স্বীকৃত একটি বিষয়। তদবির বা লবিং এরইমধ্যে একটি বিশাল শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। প্রতিবছরই আইন প্রণেতাদের প্রলুব্ধ করতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো লবিংবাবদ প্রায় ৩৩০ কোটি ডলারের বেশি পরিমাণ অর্থ খরচ করে বলে ধারণা করা হয়।

সেন্টার ফর রেসপনসিভ পলিটিকস নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত এক হিসাবে দেখা যায়, ২০১২ সালে গুগল একাই ৫৪ লাখ ডলার তদবির বাবদ খরচ করেছে। একই সময় ফেসবুক ব্যয় করেছে ৬ লাখ ৫০ হাজার ডলারের বেশি।

তবে নবগঠিত গ্রুপটিকে ঠিক তদবির গ্রুপ নামে অভিহিত করতে নারাজ এর উদ্যোক্তারা। তাদের দাবি মার্কিন আইন প্রণেতাদের ইন্টারনেট সম্পর্কে যথাযথ ‘ প্রশিক্ষণ’ দিতে এ প্রতিষ্ঠান কাজ করবে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান মাইকেল বেকারম্যান মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেসেন্টিটিভের জ্বালানি ও বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির প্রধানের পরামর্শক হিসেবে কাজ করতেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা কংগ্রেসনাল জেলাগুলোতে ইন্টারনেটের প্রভাব সম্পর্কিত বিষয়ে আইন প্রণেতাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিতে আগ্রহী।’

এ উদ্যোগের সঙ্গে যোগ দিতে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম এবং তাদের কাজের বিষয়বস্তু আগামী সেপ্টেম্বরে ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

সম্প্রতি মার্কিন আইনসভায় উত্থাপিত ‘স্টপ অনলাইন পাইরেসি অ্যাক্ট’ এবং ‘প্রটেক্ট আইপি অ্যাক্ট’ নামের বিলগুলো ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। এ সব আইনের মাধ্যমে ইন্টারনেটের স্বাধীনতাকে অবজ্ঞা করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে আসছে তারা।

মার্কিন আইন সভায় বিলগুলো পাশের উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিবাদে অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্য বিভিন্নভাবে তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এর অংশ হিসেবে উইকিপিডিয়া সাময়িকভাবে সেবা প্রদান বন্ধ করে প্রতীকি প্রতিবাদ জানায়।

সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর তীব্র প্রতিবাদের মুখে অবশ্য দুটি আইনকেই বর্তমানে মার্কিন আইনসভায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক