বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিতই নানা বিষয়ে লিখতে দেখা যায়। আসিফ এবার কলম ধরলেন পরীমনিকে নিয়ে। পরীমনির মুক্তির দাবিতে এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন এই সঙ্গীত শিল্পী।
ফেসবুকে পরীমনিকে নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ম্যাগাজিন ফোর্বসের বিশ্লেষণে মেয়েটা ছিল শোবিজে একজন প্রভাবশালী নারী। বাংলাদেশের ফেসবুক জগতে তার ছিল সর্বোচ্চ কোটি ফলোয়ার। এই নিয়ে মিডিয়াসহ দেশের মানুষের গর্বের শেষ ছিলো না।’
তিনি পরিমনির ব্যক্তি জীবন ও মফস্বল থেকে উঠে আসার গল্প বলতে গিয়ে লেখেন, ‘মা আগুনে পুড়ে মরেছেন দু’মাস কষ্ট পেয়ে। ব্যবসায়িক কারণে মেয়েটার বাবাও খুন হয়েছেন। সাপলুডুর সাপগুলো পুষে মইগুলো বেয়ে বেয়ে মেয়েটা হয়তো একটা জায়গায় পৌঁছেছে। মফস্বলের একটা মেয়ে এত উঁচুতে পৌঁছানোর পেছনে অবশ্যই যোগ্যতা ছিলো, রহস্যের তো শেষ নেই।
রঙ্গীন দুনিয়ায় সব মেয়েরা খারাপ, আর পুরুষরা মহান। তারকাদের প্রতি সাধারন মানুষকের দেয়া সম্মানকে ব্যাকফুটে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘোর একটা গায়েবী অভিশাপ। মেয়েটা দেশের সবচেয়ে বড় আলোচিত ক্রিমিন্যাল হয়ে গেলো হঠাৎ করেই ??? সারা দেশের গলিতে গলিতে এরকম মজায় মত্ত থাকি আমরা ভোগী পুরুষরা। দোষ হয় শুধু মেয়েদের, সমস্ত অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু তারাই। এই মেয়েটাকে এতোটা পথ কাদের শেলটারে এসেছে এই রহস্য উন্মোচিত হবে না কখনো।
মেয়েটা অবশ্যই ভাল অভিনেত্রী, মেয়েটা দেশকে আরো সার্ভিস দিতে পারতো। দেশ নেয়নি, হয়তো সে মুক্তি পেয়ে আন্তর্জাতিক তারকা হয়ে যাবে। নাচতে নেমে ঘোমটা দেয়ার পুরনো কথাটা মনে পরে গেল। আবার লোকাল ভাষায়- ঘোমটার নীচে পোংটা নাচে, এই বাক্যটাও সামনে চলে এলো।’
আসিফ আকবর রাষ্ট্রের কাছেও প্রশ্ন করে লেখেন, ‘বেশি লেখার সাহস আমার নাই। আমি নিজেও প্রতিদিন যে কোনো সরকারী বাহিনীর রেইডের অপেক্ষায় থাকি। আকাশের যত তারা ততো ধারা ফর্মূলাটা খুব মানি। যে সাত সাগর তেরো নদী পার হয়ে এতো মদ আর মাদক দেশে আসে কিভাবে? এর কোনো যুক্তিযুক্ত উত্তর কি রাষ্ট্রের কাছে পাবো? ধরা পড়ে যায় নাদান বিপথগামী উচ্চাভিলাষী কেউ কেউ।
অপরাধ প্রমাণের আগে কাউকে অপরাধী বলা অপরাধ। হরহামেশাই মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রায়ালের শিকার হতে হয় শোবিজের মানুষদের। একটা রমরমা রসাত্মক গল্প কয়দিন চলে। দেশে আসলে এসব ছাড়াও কোটি সমস্যা আছে। চারঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানে গ্রেফতার হওয়া মেয়েটার কপাল ভাল হাতকড়া পরতে হয়নি, আমি এই দেশে জাতীয় পুরস্কারের সাথে হাতকড়াও উপহার পেয়েছি। একটাই আফসোস- মেয়েটা যে পরিমাণ সিকিউরিটি পেয়েছে সেটা আমি পাইনি।
আজ ভদ্রলোকেরা আমাকে কমেন্টবক্সে প্রচুর গালি দিন প্লিজ। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই দাবি জানাই- পরীমনির মুক্তি চাই। প্রয়োজনে তাকে রিহ্যাব করানো হোক। সে ভয়ঙ্কর অপরাধী নয়, অভিভাবকহীনতার শিকার একটা লক্ষ্যহীন নৌকা মাত্র। তার কোটি ফলোয়ার আজ হয়ে গেছে দ্বিগুন হেটার্স। ফলোয়াররা যে বিপদের কারন হতে পারে- এটা বুঝতে হবে শোবিজের মানুষদের। আজব দেশের সব আজব নাগরিকদের সালাম জানাই। ভালবাসা অবিরাম…’
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট পরীমণির বাসায় অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে আটক করা হয়। বর্তমানে এই চিত্রনায়িকা রিমান্ড শেষে রয়েছেন কারাগারে।