কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপিকে। বেশ কয়েক মাস ধরেই পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী, সংবাদকর্মী- কেউই তার খোঁজখবর পাচ্ছেন না। তার নামে বিভিন্ন রকম গুঞ্জন শোনা গেলেও তার অবস্থান জানেন না কেউ।
শোনা যাচ্ছে পপি এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে গোপনে সংসার করছেন।
এ বিষয়ে জানতে ও তিনি কোথায় আছেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পপির মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া মিলছে না।
পপির পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বললে তারাও কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তারা জানান, তাদের কাছেও পপির কোনো তথ্য নেই। অনেক দিন যোগাযোগ করেন না পপি।
কিন্তু একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই অভিনেত্রীর হঠাৎ এভাবে নিখোঁজ হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে চলচ্চিত্রপাড়ায়। তার কিছু কাজ আটকে আছে। এ নিয়ে যেমন বিপাকে আছে কিছু নির্মাতা-প্রযোজক; পাশাপাশি পপির খোঁজ না মেলাটাও সবাইকে ভাবাচ্ছে। উঠছে প্রশ্নও, একজন প্রথম সারির নায়িকা কোথায় উধাও হয়ে গেলেন!
এদিকে সম্প্রতি পপির মা মরিয়ম বেগম এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, মেয়ে তার কোনো খোঁজ রাখে না। ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওতে পপির মা বলেন, ‘পপি আমার সাথে থাকে না। আমিও পপির সাথে থাকি না। পপি কোথায় থাকে আমি জানি না। আমি কোথায় থাকি পপি জানে না। পপি বলে, আমাকে সে খাওয়ায়-পরায়, আসলে সে খাইতেও দেয় না, পরতেও দেয় না। পপির বাসায়ও আমি থাকি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘পপি আমাকে ২০০৭ সালে ছেড়ে দিছে। এখন আমি কোথায় আছি না আছি পপি বলতে পারে না। আর পপি কোথায় আছে আমি বলতে পারি না। আমাকে নিয়ে যারা পপির কথামতো লিখতেছেন তারা ভুল লিখছেন।’
মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ ভালো বলেই দাবি করতেন পপি। প্রায়ই তিনি বলতেন, ‘মাকে ভীষণ ভালোবাসেন। তার সহযোগিতায়ই তিনি সিনেমার নায়িকা হতে পেরেছেন। এত দূর আসতে পেরেছেন।’ পপির সুবাদে ২০১৯ সালে ‘গরবিনী মা’ সম্মাননাও পেয়েছিলেন তার মা মরিয়ম বেগম।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরের কাছেও পপির খোঁজ জানতে চাওয়া হয়। এ অভিনেতাও কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তিনি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘সাংবাদিকদের সাথেই তো শিল্পীদের ভালো সম্পর্ক থাকে। তারাই তো বলতে পারে পপি কোথা্য় আছে। কি করছে। আমরা তার যখন করোনা হয়েছিল তখন যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তার সাড়া পাইনি।’
হঠাৎ একজন গুণী অভিনেত্রী, জনপ্রিয় নায়িকার এমন নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি কানাঘুষা ও মজার বিষয় থেকে সিরিয়াস হয়ে উঠছে ক্রমেই। অনেক রহস্য যেমন জমছে তেমনি উৎকণ্ঠাও প্রকাশ পাচ্ছে অনেকের ভাবনায়। কেউ কেউ দাবি করছেন পপির সন্ধানে আইনি পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
আবার অনেকের মতে হয়তো কোনো কারণে বা অভিমানে গাঢাকা দিয়েছেন পপি। সময় হলেই ফিরে আসবেন। শুরু করবেন বাকি থাকা কাজও।
প্রসঙ্গত, নায়িকা হিসেবে পপির অভিষেক হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। কিন্তু মুক্তির দিক থেকে তার প্রথম সিনেমা ‘কুলি’। ঢাকাই চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় এ নায়িকা তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন।
পপি সর্বশেষ চলচ্চিত্র প্রজাপতি’। ২০২০-এর জুনে এর কাজ করেন তিনি। ছবিটির প্রায় ২০ শতাংশ কাজ এখনো বাকি। এছাড়াও ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ নামে একটি ছবির শুটিং শেষ করেছেন পপি। কিন্তু চলচ্চিত্রটির পরিচালক সাদেক সিদ্দিকী জানান, ডাবিং না করেই হাওয়া হয়ে গেলেন নায়িকা। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর আরেকজনকে দিয়ে ডাবিং করাতে হয়েছে। ছবিটি এখন মুক্তির জন্য প্রস্তুত।