করোনাভাইরাসের টিকা কোনোভাবেই বেসরকারি খাতে না দেওয়ার সুপারিশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বেসরকারিভাবে টিকা দেওয়ার জন্য মোবাইলে এসএমএস দেওয়া হচ্ছে। আমি নিজেই এ ধরনের একটি এসএমএস পেয়েছি। কোন কোন ধরনের টিকা পাওয়া যায় সেটাও জানানো হচ্ছে। এ বিষয়ে কমিটিতে আমরা সতর্ক থাকতে বলেছি।
বেসরকারি খাতে টিকা এলে অব্যবস্থাপনার আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দেখা যাবে মেয়াদোত্তীর্ণ টিকা নিয়ে আসবে। পানি ভরে টিকা দেওয়া হবে। আর সব দোষ পড়বে সরকারের ওপর। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পর্যন্ত টিকা বিক্রিতে নেমে পড়বে। এ ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী এই টিকা কমিটির মেম্বার। আমরা তাকে বলেছি ওই কমিটিতে যেন আমাদের এ পর্যবেক্ষণ জানানো হয়।
দেশে এখন চারটি কোম্পানির কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হল অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না ও সিনোফার্মের টিকা।
বুধবার (১১ আগস্ট) পর্যন্ত বিভিন্ন উৎস থেকে এসব কোম্পানির মোট দুই কোটি ৯০ লাখ ৪৩ হাজার ৯২০ ডোজ টিকা এসেছে দেশে। মঙ্গলবার (১০ অগাস্ট) পর্যন্ত এক কোটি ৯৬ লাখ ৭১ হাজার ৬২০ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। আর মজুত আছে ৫৯ লাখ ৭২ হাজার ৩০০ ডোজ।
টিকার মেয়াদের বিষয়ে ফারুক খান আরও বলেন, যদিও এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। তারপরও আমরা তাদের বলেছি, টিকার মেয়াদ কতদিন আছে সেটা আনার আগে দেখে নিতে। সে টিকা আমরা যেভাবেই পাই না কেন। উপহার হিসেবে হোক বা কিনে আনা হোক। কারণ দেখা গেল, বাংলাদেশে এসে যখন পৌঁছাল তার মেয়াদ ১৫ থেকে ২০ দিন রয়েছে। ওই টিকা পরে মাঠ পর্যায়ে যেতে যেতে আর মেয়াদই থাকবে না। রোল আউট করতে করতে ডেট চলে যাবে। এ বিষয়ে আমরা তাদের সতর্ক করে দিয়েছি।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন দেশ বা প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাকসিন আমদানির ক্ষেত্রে মেয়াদ যাতে ছয় মাস থাকে তা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি পাইপলাইনে থাকা ভ্যাকসিনগুলো দ্রুত আনার জন্য তৎপরতা অব্যাহত রাখতে কমিটি থেকে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেওয়া হয়।
১০ বছর বয়স পর্যন্ত বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের টিকার আওতায় আনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশ নেন কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, আব্দুল মজিদ খান, হাবিবে মিল্লাত।