পদ্মাসেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংক-কে আর কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত এক আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বলেন, “আপনারা এসব তথ্য কোথা থেকে পান ? অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে বিশ্বব্যাংক বরাবর আর কোনো চিঠি পাঠানো হয়নি।“
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, “সেখানে (বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে) আমাদের নির্বাহী পরিচালক রয়েছেন। তিনিই বিষয়টি দেখাশোনা করছেন। এছাড়া গতকাল (বুধবার) পদ্মাসেতু নিয়ে জাইকার সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের কথা হয়েছে। এ বৈঠকের খবর এখনো পাওয়া যায়নি।“
“সবকিছুই সরকার করেছে কিন্তু দেরিতে“ সাংবাদিকদের এমন কথার জবাবে দ্বি-মত পোষণ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আমরা অনেক আগেই বিশ্বব্যাংককে বলে আসছি এবং অন্যরাও বলেছে। কিন্তু বিশ্বব্যাংক এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করে গত ৪ জুন এবং এর পরই তারা ৪টি শর্ত দেয়। এর মধ্যে দুটি শর্ত তখনই পূরণ করা হয়। তৃতীয়টি হচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইন অনুযায়ী তারা কোনো তথ্য কোনো সংস্থার সঙ্গে শেয়ার করতে পারে না।“
“চতুর্থটি তারা বলেছে যাদের নাম আছে তাদের বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া। এক্ষেত্রে আমরা বলেছি, অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণ লাগবে। কিন্তু যে উৎস থেকে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে বলে বলছে সেটা প্রকাশ করতে রাজী নয় তারা। এ অবস্থায় তাদের অভিযোগের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।“
এ প্রসঙ্গে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন-কে একজন“সত্যিকার দেশপ্রেমিক“ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “তার এই স্বেচ্ছা পদত্যাগ বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।“
“বিশ্বব্যাংক যদি ফিরে না আসে তাহলে কি করা হবে“– সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে কোনো মন্তব্য রতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “পদ্মাসেতু নির্মাণে সরকার চারটি বিকল্প নিয়ে এগোচ্ছে। প্রথমটি বিশ্বব্যাংকসহ, দ্বিতীয়টি বিশ্বব্যাংক ছাড়া অপর ৩ দাতা সংস্থা ও সম্ভব হলে নতুন কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা, তৃতীয়টি মালয়েশিয়ার প্রস্তাব এবং চতুর্থটি হচ্ছে নিজস্ব অর্থায়ন।“
অর্থমন্ত্রী বলেন, “মালয়েশিয়ার প্রস্তাবটি পূর্ণাঙ্গ নয়। আর অপর তিন দাতাসংস্থার সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আইডিবি তাদের মতামত জানিয়ে দিয়েছে। জাইকার সঙ্গে আলোচনা চলছে।“
পদ্মাসেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে চলমান প্রক্রিয়ার কোনো দূরত্ব আছে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “নেই“।
এছাড়া যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য গোলাম মাওলার রনি’র বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তিনি হচ্ছেন টক শো’র রাজা।“
অ্যাকাউন্ট ও সারচার্জ প্রসঙ্গ
অর্থমন্ত্রী বলেন, “এবছর পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ শুরু করার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা সরকারের রয়েছে। সুতরাং পদ্মাসেতু নির্মাণে এবছর কোনো সারচার্জ আরোপ করা হবে না।“
অ্যাকাউন্ট খোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকার চাচ্ছে সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকেও অ্যাকাউন্ট খুলতে। এজন্য কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষ এ হিসাব তদারক করবে, তবে এ অর্থ ব্যয় হবে বাজেটের আইন অনুযায়ী। “