পদ্মাসেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এর ফলে বাংলাদেশকে যে অপবাদ দেওয়া হয়েছে তারও স্খলন হবে বলে মনে করছেন তিনি।
বুধবার বিকেলে এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে অর্থমন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “পদ্মাসেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে এবং বাংলাদেশকে যে অপবাদ দেওয়া হয়েছে এরও স্খলন হবে।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ এ বছরেই শুরু করা হবে এবং সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে, পদ্মাসেতু প্রকল্পে কোন ধরনের দুর্নীতি হবে না।”
তিনি বলেন, “যদিও বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের কোন প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি, তবুও সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তদন্তের কাজ এগিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এরইমধ্যেই ছুটিতে গেছেন।”
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “যে প্রমাণটি বিশ্বব্যাংক বিশ্বাসযোগ্য বলে দাবি করছে সেটি আমাদের আইনে তখনই বিশ্বাসযোগ্য হবে যখন এ অভিযোগটি দ্বিতীয় একটি সূত্র দ্বারা সমর্থিত হবে।”
বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, “বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই অপর তিনজন উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক এরইমধ্যেই জানিয়েছে যে, তারা এ প্রকল্প বাস্তবায়নে গভীরভাবে আগ্রহী এবং এজন্য যেসব বাধা সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো অপসারণে বাংলাদেশ সরকারের সাফল্য কামনা করেছে। এছাড়া জাইকা-ও এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের সভাপতি এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করছেন। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকও এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় লিপ্ত।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজটি বিঘ্ণিত হয় যখন বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতির আশংকা করে। তাদের এই আশংকা নিবৃত্তির জন্য সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে দায়িত্ব দেয়। গত বছর আগস্টে তদন্তের কাজ শুরু হয়। এ তদন্তে এখনও কোন ধরনের দুর্নীতি পাওয়া যায়নি এবং এ তদন্ত শুধু অব্যাহত নয়, আরো জোরদার করা হয়েছে।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আমরা বিশ্বব্যাংককে বারবারই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য চাপ দেই এবং তাদের এখানে এসে আমাদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানাই। অবশেষে গত জুনে বিশ্বব্যাংক ঢাকায় আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে। আলোচনা কিছুটা এগিয়ে গেলে ৫ জুন চারটি শর্ত দেয় বিশ্বব্যাংক।”
তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাংক স্বীকার করেছে যে, তাদের দু’টি শর্ত (দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন এবং উন্নয়ন সহযোগীদের অধিকতর ভূমিকা প্রদান করে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করা) এরইমধ্যেই পূরণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তারা আরও স্বীকার করেছে যে, দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত এবং তাদের তদন্ত সম্বন্ধে একটি ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শুধু একটি শর্তে আইনগত কারণে আমরা তাদের প্রস্তাবিত পদক্ষেপে সম্মত হই নি।”