চিকিৎসা নিতে গত বছর অন্যান্য দেশ থেকে ভারতে যাওয়া মেডিকেল পর্যটকদের ৫৪.৩ শতাংশই বাংলাদেশি। তালিকায় থাকা বাকিদের ৯ শতাংশ ইরাক, ৮ শতাংশ আফগানিস্তান, ৬ শতাংশ মালদ্বীপ এবং ৪.৫ শতাংশ আফ্রিকার কিছু দেশের নাগরিক।
ভারতের কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ এক রিপোর্টে এমন তথ্য জানানো হয়েছে বলে আজ শনিবার এক অনলাইন প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতের জাতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ভারতের ন্যাশনাল মেডিকেল অ্যান্ড ওয়েলনেস ট্যুরিজম প্রমোশন বোর্ডের সদস্য প্রখ্যাত চিকিৎসক দেবী শেঠি জানান, তাদের বিদেশি রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই যান জটিল হার্ট সার্জারি এবং ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে বিদেশি রোগীর সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। এটি আবার আগের অবস্থায় ফিরতে কয়েক মাস লাগতে পারে।
ডা. দেবী শেঠির মতে, বাংলাদেশিরা চিকিৎসা সেবার জন্য ভারতের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে সেখানকার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা ছাড়াও একই ধরনের খাবার, ভাষা, সাশ্রয়ী মূল্যে চিকিৎসা এবং সাংস্কৃতিক স্বাচ্ছন্দ্য অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
ডা. দেবী শেঠির মতে, করোনার ধাক্কা সামলে ভারতের মেডিকেল ট্যুরিজম আগের অবস্থায় ফিরতে তিন থেকে ছয় মাস লাগতে পারে। তিনি বলেন, ফ্লাইট চালু হওয়া, দূতাবাসগুলোতে মেডিকেল ভিসা ইস্যু হওয়া- এসবে সময় লাগবে। বর্তমানে শুধু জরুরি ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। মেডিকেল ট্যুরিজম ফের শুরু হতে ওইসব দেশের পাশাপাশি ভারতের মহামারি পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতীয় পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০০৯ সালে দেশটিতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বিদেশিদের মধ্যে বাংলাদেশিদের হার ছিল ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ। তখন ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ মেডিকেল ট্যুরিস্ট নিয়ে এ তালিকার শীর্ষে ছিল মালদ্বীপ। এরপর ক্রমাগত বাংলাদেশিদের হার বেড়েছে এবং কমেছে মালদ্বীপের।
২০১৯ সালে ভারতে মেডিকেল ট্যুরিস্টদের মধ্যে বাংলাদেশিদের হার দাঁড়ায় ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, বিপরীতে মালদ্বীপের হার নেমে আসে মাত্র ৭ দশমিক ৩ শতাংশে। ওই বছর আফগান মেডিকেল ট্যুরিস্টদের হার ছিল ১০ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ৩ শতাংশে। ২০১৯ সালে তা কমে ৪ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছায়। এরপর ২০২০ সালে আফগান মেডিকেল ট্যুরিস্টদের সংখ্যা আবারও বেড়েছে।
ভারতীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ফোরটিস হেলথকেয়ারের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ডা. মনীষ মাত্তো বলেন, দিল্লি এবং মুম্বাইয়ের বেশিরভাগ মেডিকেল ট্যুরিস্ট আসেন বাংলাদেশ এবং পশ্চিম এশিয়া থেকে। চেন্নাই পায় মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা এবং মরিশাস থেকে। ব্যাঙ্গালুরুর অধিকাংশ মেডিকেল ট্যুরিস্ট বাংলাদেশ, পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকান দেশগুলো থেকে আসে।