পেগাসাস স্পাইওয়্যারের ফাঁদে বিশ্বের বহু নামিদামি শীর্ষ নেতারাও। ইসরায়েলি এনএসও গ্রুপের স্পাইওয়্যার পেগাসাস প্রজেক্টের ফাঁস হওয়া অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে, এবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ ১৪ নেতার মোবাইল ফোন নম্বর। দ্য গার্ডিয়ান-এর খবরে বলা হয়েছে এসব তথ্য।
দ্য গার্ডিয়ানের আরও খবরে বলা হয়েছে, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও ইমরান খানসহ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার নম্বরও রয়েছে তালিকায়। আরও ৩৪টি দেশের কূটনীতিক, সামরিক প্রধান ও সিনিয়র রাজনীতিকদের মোবাইল ফোন নম্বরও চিহ্নিত করা গেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট, সিরিল রামাফোসাকে ২০১৯ সালে রুয়ান্ডা কর্তৃক টার্গেট করা হয়। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে ২০১৯ সালে মরক্কোর কোনো এক ব্যক্তি টার্গেট করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান, টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস, ২০১৯ সালে মরক্কো থেকে টার্গেটে পড়েন। লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃক টার্গেট করা হয়। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল ২০১৯ সালে বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন মরক্কো থেকে কোনো ব্যক্তির টার্গেটে পরিণত হন। মরক্কোর বাদশাহ মোহাম্মদ ষষ্ঠ, ২০১৯ সালে তার নিজ নিরাপত্তাবাহিনী কর্তৃক টার্গেট হয়েছেন বলে জানা গেছে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তার দেশের ভেতর থেকেই কেউ টার্গেট করে মরক্কোর প্রধানমন্ত্রী সাদেদ্দিন ওথমানিকে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ২০১৯ সালে ভারতের কোনো ব্যক্তি দ্বারা টার্গেট হন। মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিলিপ কালডেরনের নম্বর ২০১৬ ও ২০১৭ সালে টার্গেট করা হয়। মার্কিন-ইরান চুক্তির প্রধান মধ্যস্থত্যকারী রবার্ট মালেই ২০১৯ সালে মরক্কোর কোনো ব্যক্তি দ্বারা টার্গেটে পড়েন।
২০১৯ সাল থেকে ‘দ্য পেগাসাস প্রজেক্ট’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে ফোনে নজরদারির বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের একটি অনুসন্ধানী টিম। ১৭টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের অনুসন্ধানের একটি রিপোর্ট রোববার প্রকাশিত হয়। এরপর তোলপাড় শুরু হয় গোটা বিশ্বে।
ফরেনসিক বিশ্লেষণে উঠে আসে, স্মার্টফোনের তথ্য তারা হ্যাক করে নেয় পেগাসাস স্পাইওয়্যার। নজরদারির শিকার হন মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিক, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশ্বজুড়ে ৫০ হাজার ফোন হ্যাক করে নেয়া হয় এই পেগাসাসের মাধ্যমে। আড়িপাতা হয় ১৮০ জন সাংবাদিকের ফোনেও।
যদিও বরাবরের মতো পেগাসাস স্পাইওয়্যারের বিক্রেতা ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসও দাবি করছে, এই হ্যাকিংয়ের সঙ্গে তারা যুক্ত নয়। তারা শুধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বাছাইকৃত সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এই প্রযুক্তি বিক্রি করে আসছে।