আশির দশকের জনপ্রিয় নায়িকা দোয়েল আর বেঁচে নেই। ২৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ২০মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডির দ্বীপহাম হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। স্বামী চলচ্চিত্রাভিনেতা সুব্রত দোয়েল আর এক মেয়ে জনপ্রিয় ক্ষুদে অভিনেত্রী দিঘি ও এক ছেলে অন্তর সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।
দীর্ঘ দিন ধরেই বিভিন্ন শারিরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন দোয়েল। গত বছর নভেম্বরে হঠাৎ করেই দোয়েল স্ট্রোক করেন। অচেতন অবস্থায় তাকে প্রথমে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রায় দু সপ্তাহ অচেতন থাকার পর তাকে পিজি হাসপাতালে স্থানান্তার করা হয়। প্রায় তিন মাস পর দোয়েলের জ্ঞান ফিরে আসে। কিন্তু তিনি হয়ে পড়েন পুরোপুরি বাকরুদ্ধ ও অসাড়। স্বাভাবিকভাবে চলাফেলায় তিনি হয়ে পড়েন অক্ষম। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, দোয়েলের পক্ষে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা কম।
দোয়েলের চিকিৎসা তহবিল গঠনে সহায়তার জন্য চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আয়োজনে রাজধানীর কলবাগান মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল একটি চ্যারিটি কনসার্ট।
সম্প্রতি শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে আবারও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন দোয়েল। প্রথমে তাকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আইসিইউ কেবিন খালি না থাকায় সেখানে তাকে ভর্তি করা সম্ভব হয় নি। পরে তাকে ধানমন্ডির দ্বীপহাম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে পৃথিবীর সব মায়া কাটিয়ে দোয়েল পারি দেন না-ফেরার দেশে।
বৃহত্তর ঢাকার বিক্রমপুরের মেয়ে দোয়েল। ১৯৬৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। তার আসল নাম ইফতে আরা ডালিয়া। ইন্টারমিডিয়েট শেষ করার পর পর ‘দোয়েল’ নাম নিয়ে তিনি চলচ্চিত্রে আসেন্ প্রথম অভিনয় করেন চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘চন্দ্রনাথ’ ছবিতে। দোয়েল অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি হলো- হিসাবনিকাশ, জিপসী সর্দার, ফয়সালা, সৎভাই, প্রেম কাহিনী, তওবা, ওগো বিদেশিনী, লক্ষী বধূ, মার্শাল হিরো, আজ তোমার কাল আমার প্রভৃতি।
১৯৮৩ সালে নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে আসা নায়ক সুব্রতের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেম করার পর ৮৮সালে তারা বিয়ে করেন। এই তারকা দম্পতির মেয়ে দীঘি চলচ্চিত্রে এ সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় শিশুশিল্পী।
নায়িকা দোয়েলের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ২৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে তার দীর্ঘদিনের কর্মক্ষেত্র এফডিসিতে। রাজধানীর পান্ন্থপথে তার বাসভবন সংলগ্ন মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে তার আরেকটি নামাজে জানাজা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে দাফন করা হয়।