থার্টিফার্স্ট নাইটে ডিএমপি’র চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়

থার্টিফার্স্ট নাইটে ডিএমপি’র চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়

ইংরেজি নববর্ষের রাত নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ সময় নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা হবে চার স্তরের কঠোর নিরাপত্তা বলয়।

বিশেষ পর্যবেক্ষণে থাকছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কূটনৈতিক পাড়া। মাঠে থাকবে ভিডিও ক্যামেরাসহ গোয়েন্দা পুলিশ।

ডিএমপি সূত্রমতে, থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনের জন্য ইতিমধ্যেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ রাতে নগরীতে থানা ও নিয়মিত পুলিশের পাশাপাশি থাকছে টহল পুলিশ, ব্যাপক সংখ্যক চেকপোস্ট ও গোয়েন্দা পুলিশ।

রাজধানীর আটটি ক্রাইম জোনের উপ-কমিশনাররা (ডিসি) সংশ্লিষ্ট জোনের থানাগুলোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে ডিএমপি’র নেওয়া এসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করবেন।

ডিএমপি সদর দপ্তরের মনিটরিং সেল পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন বলে সূত্র জানায়।

নিরাপত্তার স্বার্থে থার্টিফাস্ট নাইটে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত মোট পুলিশের সংখ্যা না জানালেও পুলিশের একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবারের তুলনায় এবার বেশি পরিমাণে নিরাপত্তাকর্মী মঠে থাকবেন।

এ ব্যাপারে ডিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) মাসুদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে নিরাপত্তার জন্য। এজন্য যা কিছু প্রয়োজন তাই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, নববর্ষের রাতে রাজধানীতে প্রায় ১০ হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

এদিকে থার্টিফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে অন্তত ২০টি স্থানকে স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে এসব স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এসব স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কূটনৈতিক পাড়া, গুলশান, বারিধারা ও বনানীর মতো অভিজাত এলাকা এবং বিভিন্ন বার।

এসব স্থানের নিরাপত্তার জন্য ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে ডিএমপি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১ জানুয়ারি ২০১২ ভোর ৫টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহনে প্রবেশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা-ফনিক্স রোড ক্রসিং, আমতলী ক্রসিং, কাকলী ক্রসিং, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। এসব এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অন্যান্য সব ক্রসিং বন্ধ থাকবে।

একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র শাহবাগ ক্রসিং, পুরাতন হাইকোর্ট ক্রসিং, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ইমার্জেন্সি গেট ক্রসিং এবং নীলক্ষেত ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। বাকি সব ক্রসিং বন্ধ থাকবে।

এছাড়া রাত ৯টার মধ্যে এ এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের নিজ গন্তব্যে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের পরে পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

অপর দিকে নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরা, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে কোনো ধরনের বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না বলেও নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

প্রতিবারের মতো এবারও থার্টিফাস্ট নাইটে পুলিশে বিশেষ নজর থাকছে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার আরোহীদের ওপর। এ যানগুলোর প্রতিটির ওপর পুলিশ বিশেষ নজর রাখবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি সূত্র।

এদিকে নির্বিঘেœ ও নিরাপদে থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনের জন্য বিপুল সংখ্যক গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে নামছে। এদের মধ্যে প্রায় দেড়শ’ জনের কাছে থাকবে স্টিল ও ভিডিও ক্যামেরা।

এ রাতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কা থেকেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।

নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নগরীতে শনিবার বিকেল থেকেই বসছে শতাধিক চেকপোস্ট। এগুলোর মধ্যে বিশেষ কড়াকড়ি থাকবে নগরীর প্রবেশ পথ, রমনা, শাহবাগ, ধানমণ্ডিি, উত্তরা, অভিজাত এলাকা ও কূটনৈতিক পাড়া।

ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের সময় বারগুলোতে যে কোনো ধরনের উশৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে পুলিশের পাশাপাশি মেতায়েন থাকবে সাদা পোশাকের পুলিশ।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর