দীর্ঘ ২৮ বছরের শিরোপা পিপাসা মিটেছে আর্জেন্টিনার। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছে তারা। লা আলবিসেলেস্তেদের এমন জয়ে শুধু আর্জেন্টিনা নয়, সরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য ভক্তই উল্লাসে মেতে উঠে। বাদ যায়নি বাংলাদেশি ভক্তরাও। এমনকি মারামারি, ম্যাচ শেষের আনন্দ-হতাশা একই মাত্রায় হলো এই বদ্বীপে!
আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের এমনই পাগলপারা বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকরা। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে আর্জেন্টিনার সমর্থনকে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেন। কেউ কেউ তো বলেন বাংলাদেশে বসে যাদের জন্য এত চিৎকার, তারা হয়তো ঠিকঠাক জানেন না আমাদের দেশের নামটাও। কিন্তু এবার বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা ভক্তরা সেটির একটা স্বীকৃতি পেলেন।
সম্প্রতি কোপা আমেরিকার ফাইনালে মেসিদের জয়ে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় করোনাকালীন বিধিনিষেধের উপেক্ষা করে আর্জেন্টিনার পতাকা নিয়ে উল্লাস করে ফুটবলপ্রেমীরা। আর সেটি চোখে পড়ে সাবেক আর্জেন্টাইন অধিনায়ক হুয়ান পাবলো সোরিনার। এ দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশে উৎসবের একটি ভিডিও যুক্ত করে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়েছেন আর্জেন্টিনার ২০০৬ বিশ্বকাপ দলের এই অধিনায়ক। যেখানে তিনি স্মরণ করেছেন ২৬ বছর আগে বাংলাদেশিদের তাকে সমর্থন দেওয়ার কথা। সেই সঙ্গে এবারের কোপার শিরোপা তিনি বাংলাদেশিদের উৎসর্গ করেছেন।
নিজের ভেরিফায়েড ইন্সটাগ্রামে তিনি লিখেছেন, ‘২৬ বছর আগে ১৯৯৫ সালে আমরা কাতারে ব্রাজিলের বিপক্ষে যুব বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিলাম। দেশ থেকে কত দূরে ছিলাম! পরিবার, বন্ধুবান্ধব কিংবা সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এত প্রযুক্তি ছিল না। কিন্তু সেই অবিশ্বাস্য স্টেডিয়ামেও আর্জেন্টিনার একটা পতাকা ছিল, কয়েকজন ভক্ত পতাকাটি এত আবেগ নিয়ে নাড়াচ্ছিলেন। আমাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছিল সে দৃশ্য, মনে রোমাঞ্চ তৈরি করেছিল। পতাকাটার গায়ে লেখা ছিল ‘বাংলাদেশ’। কয়েকজনের একটা গ্রুপ আমাদের সমর্থনে লাফাচ্ছিল, চিৎকার করছিল।’
সেই স্মৃতির সঙ্গে এবারের দৃশ্য মিলিয়ে বাংলাদেশকে মন থেকে ধন্যবাদ দিলেন সোরিন। বলেন, ‘সে কারণে বাংলাদেশের সবাইকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই, সম্মান জানাতে চাই, যারা কিনা বিশ্বের অন্য একটা প্রান্তে রাস্তায় নেমে আমাদের কোপা আমেরিকা জয়ের উদযাপন করেছেন!’
রোববার (১১ জুলাই) দিবাগত রাতে ইংল্যান্ড-ইতালির মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচে লুক শ’র শুরুর গোলের আনন্দ মাটি করে দিয়ে ইতালির জয়ের নায়ক বনে যাওয়া লিওনার্দো বোনুচ্চির জন্য দিনটা ক্যারিয়ার সেরা। জয়ের তৃষ্ণায় তেতে থাকা এই ডিফেন্ডার ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে আনন্দে পান করে ফেলেন বেশ কয়েক বোতল পানীয়। ৩৪ বছর বয়সী এই ফুটবলারদের আমুদে আচরণে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে সবার মাঝে।
ট্রফি জয়ের পর চ্যাম্পিয়ন দল রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর কোচ মানচিনিসহ পুরো ইতালি দলকে সংবর্ধনা জানান সমর্থকরা। এসময় ভক্তদের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে চ্যাম্পিয়ন দল।