নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের হাসেম ফুড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে পুলিশ। আজই রূপগঞ্জ থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হবে। মামলায় কারখানা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, কারখানা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। কালক্ষেপণের সুযোগ নেই। আজকের মধ্যেই মামলা নথিভুক্ত করা হবে। মামলার পরই আগুন লাগার ঘটনার তদন্তে মাঠে নামবে পুলিশ। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ উদঘাংটন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, সেজান জুস করাখানায় ৫২ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। যেহেতু ৫২ শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন সেহেতু এটি হত্যা মামলা হবে। পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করবে। মামলার পর বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। আগুনের সূত্রপাত, কেন আগুন এত ভয়াবহ হলো, কেন এত শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটেছে, কেনই বা আগুন লাগার পর শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হতে পারেননি। এটি দুর্ঘটনা, নাকি নাশকতা সবই তদন্ত করে উদঘাটন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, কারখানা নির্মাণে ত্রুটি ছিল কি না, মালিকপক্ষের গাফিলতি কতটুকু ছিল, সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত চলছে। তদন্তে যারাই দোষী হবে তাদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। কারখানার ছয় তলা ভবনটিতে তখন প্রায় চারশ’র বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কিকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সব ফ্লোরে।
প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে আগুনে পুড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। সবমিরিযে এ পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে।