চলে গেলেন চলচ্চিত্র পরিচালক শামসুদ্দিন টগর

চলে গেলেন চলচ্চিত্র পরিচালক শামসুদ্দিন টগর

নন্দিত কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুতে যখন সমগ্র জাতি শোকাহত, ঠিক সেই সময়ে অনেকটা নিরবে নিভৃতে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন ঢালিউডের সফল চলচ্চিত্র পরিচালক শামসুদ্দিন টগর। গত ২৩ মে সোমবার রাত ৮টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী , দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রেখে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।

সত্তর ও আশির দশকের জনপ্রিয় নায়িকা শাবানা অভিনীত ‘বানজারান’ ছবির কথা এখনো মনে আছে অনেকের। ছবিতে তার গাওয়া একটি গান ‘আমরা তো বানজারান দেখাবো নাচ গান’ এখনো জনপ্রিয়। ব্যবসা সফল এ ছবির নির্মাতা ছিলেন শামসুদ্দিন টগর। তার পরিচালিত ব্যবসাসফল ছবিগুলোর মধ্যে আরো আছে- ‘কার বউ’, ‘মহেশখালীর বাঁকে’, ‘আখেরী নিশান’, ‘হুর এ আরব’, ‘যুবরাজ’, ‘গলি থেকে রাজপথ’, ‘দখল’, ‘সম্রাট’, ‘রাজ ভিখারী’, ‘নকল শাহজাদা’ ইত্যাদি।

চলচ্চিত্র পরিচালক শামসুদ্দিন টগর মুত্রনালিতে সমস্যার কারণে গত তিন দিন আগে তিনি ঢাকার ধানমন্ডিস্থ ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি হন। গত ২২ জুলাই তার সফল অস্ত্রোপাচার হলেও ২৩ জুলাই ইফতার শেষে তিনি অনেকটা আকস্মিকভাবেই মৃত্যুবরণ করেন। তার এই অকাল মৃত্যুতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

চলচ্চিত্রে শামসুদ্দিন টগরের যাত্রা শুরু হয় একজন সহকারী পরিচালক হিসেবে। পারভেজ ফিল্মস প্রযোজিত ‘দস্যু বনহুর’ তার প্রথম পরিচালিত ছবি। এই ছবিতে অভিনয়ের মধ্যদিয়েই একজন নায়িকা হিসেবে চলচ্চিত্রে অঞ্জনার অভিষেক ঘটে। ছবিটিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন সোহেল রানা।

শামসুদ্দিন টগর সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অঞ্জনা বলেন, ‘খবরটি শুনার পর থেকেই ভীষণ খারাপ লাগছে আর কান্না পাচ্ছে। চলচ্চিত্রে তিনি ছিলেন আমার গুরু। তার কাছ থেকে অভিনয় সম্পর্কে আমি অনেক কিছু জেনেছি। সবসময় আমার সাথে হাসিমুখে কথা বলতেন তিনি। সর্বশেষ তার সাথে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছে এইতো কিছুদিন আগে। এভাবে হঠাৎ করে তিনি চলে যাবেন কখনোই ভাবিনি। দস্যু বনহুর ছবির পর ফজলুর রশীদ ঢালী প্রযোজিত ‘নূরী’ ছবিতে ওয়াসীম ভাইয়ের বিপরীতে অভিনয় করেছিলাম। আমার দুটি ছবিই ছিল ব্যবসা সফল। টগর ভাইয়ের বিদেহী আতœার মাগফেরাত কামনা করছি।’

২৪ জুলাই মঙ্গলবার সকাল এগারোটায় এফডিসিতে নামাজে জানাজা শেষে শামসুদ্দিন টগরের মরদেহ তার জন্মস্থান যশোরের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

বিনোদন