যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা এবং তাদের সঙ্গে জড়িত সংস্থার ওপর আরেক দফা বিধিনিষেধ দিয়েছে।
শুক্রবার তারা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পাশাপাশি ৪টি কোম্পানিকেও কালোতালিকাভুক্ত করেছে। খবর রয়টার্সের।
এ কোম্পানিগুলো থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী লাভবান হয়ে আসছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
নতুন এ নিষেধাজ্ঞা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির অভ্যুত্থানকারীদের ওপর চাপ বাড়াবে বলেও মনে করছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার তারা মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর মারাত্মক বল প্রয়োগ করার দায়ে দেশটির সামরিক বাহিনীর ৭ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে; যাদের মধ্যে তথ্যমন্ত্রীসহ স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিলের কয়েকজন সদস্যও আছেন।
এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র আগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারের ১৫ সদস্যকেও এ দফার নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে ওয়ানবাও মাইনিং লিমিটেড এবং তার দুটি শাখা প্রতিষ্ঠান মিয়ানমার ওয়ানবাও মাইনিং কপার লিমিটেড ও মিয়ানমার ইয়াং সে কপার লিমিটেডকে। কালো তালিকায় ঢোকা অন্য কোম্পানিটি হচ্ছে কিং রয়েল টেকনোলজিস লিমিটেড।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ওয়ানবাও মাইনিং এবং এর শাখা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেডের আয় ভাগাভাগি করে নেওয়ার চুক্তি আছে। আর ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেডের হাত ধরেই সেই আয়ের অংশ যায় মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে, যারা ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের জন্য কার্যত দায়ী।
স্যাটেলাইট যোগাযোগ সেবার মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করায় কালো তালিকায় যুক্ত হয়েছে টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি কিং রয়েল টেকনোলজিস।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কালো তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলোতে মার্কিন পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত অং সান সু চি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সু চিসহ অসংখ্য রাজনীতিবিদকে গ্রেফতার করে নানা অভিযোগ আনা হয়। এরপর দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হলে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ৮৬০ জন নিহত হয়েছে। আহত ও গ্রেফতার হয়েছে কয়েক হাজার।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘে এ বিষয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়। জুনের শেষ দিকে মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে এক বিরল আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। সংস্থাটির সাধারণ পরিষদে সামরিক জান্তার নিন্দা সংবলিত একটি রেজ্যুলেশন বা প্রস্তাবও গৃহীত হয়েছে।