ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল হতে চলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী বছর পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এই রদবদল হতে চলেছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
এদিকে আর সাত আট মাসের মধ্যেই পাঁচ রাজ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচন। এই পাঁচ রাজ্যের মধ্যে উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড আছে, যেখানে জয় পাওয়া বিজেপি-র পক্ষে রাজনৈতিকভাবে খুবই গুরুপূর্ণ। তাই এবার তার বহু প্রতীক্ষিত মন্ত্রিসভার রদবদল সেরে নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ডয়চে ভেলে বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই রদবদল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আর এবার বড় আকারে বদল হতে পারে। হলে এটাই হবে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম রদবদল।
ইতিমধ্যে কিছু রাজ্যের থেকে বিজেপি নেতাদের দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে। যেমন আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। তিনি দিল্লি এসে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে গেছেন। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীরথ সিং রাওয়াতকেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হতে পারে। মাত্র চার মাস আগে তাকে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি লোকসভার সাংসদ। নিয়মানুসারে ছয় মাসের মধ্যে তাকে বিধানসভার উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে।
বেশ কয়েকটি রাজ্যে কিছু বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন বাকি আছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচন করাবে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। দুই মাসের মধ্যে উপনির্বাচন হলে রাওয়াত মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন। না হলে তাকে সরতে হবে। এই অবস্থায় তাকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করার কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে উপনির্বাচন হলে এবং তাতে জিতলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকতেই পারেন। রাওয়াতের সঙ্গে অমিত শাহ ও বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার কথা হয়েছে। তারপর তিনি উত্তরাখণ্ড ফিরে গেছেন। উত্তরাখণ্ডের অজয় ভাট বা অনিল বালুনিও কেন্দ্রে মন্ত্রী হতে পারেন।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি যোগ দেয়ার সময় তাকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। এবার সেই প্রতিশ্রুতি পালন করা হতে পারে।
উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন বলে যোগীর রাজ্য থেকে একাধিক মন্ত্রী নেয়া হতে পারে। বরুণ গান্ধী সহ একাধিক নাম নিয়ে জল্পনা রয়েছে। আপনা দল নেত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল মন্ত্রী হতে পারেন। তার সঙ্গে আগে অমিত শাহের কথা হয়েছে। বিহারের সাবেক উপ মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদি, মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস, নারায়ণ রানে, হরিয়ানার ভূপেন্দ্র যাদবের মতো নেতার নামও হবু মন্ত্রী হিসাবে শোনা যাচ্ছে।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দলও এবার মন্ত্রিসভায় আসতে পারে। তবে তিনি সংযুক্ত জনতা দলের থেকে দুইজনকে মন্ত্রিসভায় পাঠাতে চান। রামবিলাস পাসোয়ানের ভাই পশুপতি পরস সম্প্রতি চিরাগ পাসোয়ানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে পুরো দলের দখল নিয়ে নিয়েছেন। চিরাগ একা হয়ে গেছেন। নীতীশ চাইছেন পশুপতি মন্ত্রী হোন।
বর্তমানে নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভায় ৫৩ জন আছেন। আইন অনুযায়ী, আরো ২৮ জনকে নিতে পারেন মোদি। তবে একসঙ্গে অতজনকে তিনি হয়ত নেবেন না। গত একমাস ধরে মোদি বর্তমান মন্ত্রীদের সাফল্য-ব্যর্থতার হিসাব নিয়েছেন। তারপর রদবদল করা হচ্ছে। তাই বর্তমান মন্ত্রীদের দফতর বদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।