সাব-সাহারা আফ্রিকায় ওষুধ প্রতিরোধী এইচআইভি বাড়ছে

সাব-সাহারা আফ্রিকায় ওষুধ প্রতিরোধী এইচআইভি বাড়ছে

আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে গত দশকে ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট (ওষুধ প্রতিরোধী) এইচআইভি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানচেটে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, প্রচলিত ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গঠনে সক্ষম এইআইভি/এইডস ভাইরাসের সংক্রমণ ওই অঞ্চলে বেড়েছে।

উন্নয়নশীল বিশ্বে চিকিৎসা না পাওয়া এইচআইভি পজিটিভ ২৬ হাজার মানুষের ওপর পরিচালিত গবেষণায় এমন ফলাফল পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

পর্যবেক্ষণ থেকে তারা বলেছেন, এ ধরনের প্রতিরোধী ক্ষমতা তখনই তৈরি হয় যখন আক্রান্ত ব্যক্তি প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত নিয়মিত ওষুধ সেবনে ব্যর্থ হয় এবং ডাক্তারি পর্যবেক্ষণ খুবই নিম্নমানের হয়।

ব্রিটেনভিত্তিক একটি এইচআইভি সংগঠন বলছে, আফ্রিকাতে ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট সমস্যা খুবই ভয়ানক। সেখানে বিকল্প চিকিৎসার সুযোগেরও অভাব রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) গবেষকদের পরিচালিত ওই গবেষণায় দেখা গেছে, পূর্ব আফ্রিকায় এইচআইভির ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট সমস্যা বিপজ্জনক হারে (২৯ শতাংশ) বাড়ছে। অপরদিকে দিক্ষণ আফ্রিকায় বাড়ছে ১৪ শতাংশ হারে।

তবে লাতিন আমেরিকা এবং পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকায় প্রতিরোধী অবস্থার কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।

এ ব্যাপারে ডব্লিউএইচও’র ড. সিলভিয়া বার্তানলিও এবং ইউসিএল’র ড. রবীন্দ্র গুপ্ত সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অব্যাহতভাবে এবং বর্ধিত আকারে চেষ্টা না থাকলে এইচআইভি’র ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট  বিপর্যয়কর পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। গত এক দশকে বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এইচআইভি/এইডস জনিত নানা অসুস্থতা কমে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে, কিন্তু বর্তমান সমস্যা চলতে থাকলে তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

রবীন্দ্র গুপ্ত জানান, সঠিক নিয়মে যথাযথভাবে ওষুধ সেবন না করার কারণে মূলত ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট তৈরি হয়। এ সমস্যা প্রতিরোধ করতে হলে সচেতনতা বাড়ানো এবং চিকিৎসা সেবা সহজলভ্য করার কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি জানান, ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট সমস্যা শুধু আফ্রিকা বা নিম্ন আয়ের দেশেই নেই, এ সমস্যা উন্নত দেশেও কমবেশি রয়েছে। যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে এ সমস্যা প্রায় ১০ শতাংশ বলে জানান রবীন্দ্র।

ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট ক্ষমতা একবার তৈরি হয়ে গেলে বিকল্প চিকিৎসা ছাড়া উপায় থাকে না। এ কারণে সাব-সাহারা আফ্রিকায় বিকল্প চিকিৎসা সুলভ না হওয়ায় তা বিপর্যয়কার পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে বলে গবেষকদের আশঙ্কা।

আন্তর্জাতিক