জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ১৪ দিনের পূর্ণ ‘শাটডাউনের’ সুপারিশ সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশব্যাপী আরও কঠোর কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে ভাবছে সরকার। যেকোনো সময় এ ধরনের ঘোষণা আসতে পারে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগ আজ বিকেলে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারা দেশে ১৪ দিনের পূর্ণ শাটডাউনের সুপারিশ করে।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা তাদের সুপারিশ সক্রিয় বিবেচনায় নেব। কারণ করোনা সংক্রমণ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। আমরা বিভিন্নভাবে তা কমানোর চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে যেটা প্রয়োজন হবে সেটাই আমরা করব।’
‘সীমান্ত এলাকা থেকে ভাইরাসটি খুব দ্রুত সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে একটা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আজ পরামর্শক কমিটি দেশব্যাপী শাটডাউনের সুপারিশ করেছে। এটিকেও আমরা বেশ গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করে দেখব।’
পরিস্থিতি বিবেচনায় যেকোনো মুহূর্তে কঠোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
বিকেলে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- কোভিড-১৯ রোগের বিশেষ ডেল্টা প্রজাতির সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে ও দেশে ইতোমধ্যেই রোগের প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এই প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে সারা দেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশোর্ধ জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়। রোগ প্রতিরোধের জন্য খণ্ড খণ্ডভাবে নেওয়া কর্মসূচির উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
অন্যান্য দেশ, বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরোধে করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে। তাদের মতামত অনুযায়ী, যে সব স্থানে পূর্ণ ‘Shutdown’ প্রয়োগ করা হয়েছে সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ও জনগণের জীবনের ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারা দেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘Shutdown’ দেওয়ার সুপারিশ করছে।
জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ -এর ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছেন। এই জন্য সভায় তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। এ রোগ থেকে পূর্ণ মুক্তির জন্য ৮০ শতাংশের ঊর্ধ্বে মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়োজন। বিদেশ থেকে টিকা সংগ্রহ, লাইসেন্সের মাধ্যমে দেশে টিকা উৎপাদন করা ও নিজস্ব টিকা তৈরির জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গবেষণা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার প্রতি কমিটিপূর্ণ সমর্থন জানায়।